শিফটিং ডিউটি’র জন্য ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে? সুস্থ থাকতে কী কী করবেন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্তমানে বেশিরভাগ শ্রমিক-কর্মচারী, স্বাস্থ্যকর্মী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, পানীয় জল, বিদ্যুতের মতো জরুরি পরিষেবার কাজে যুক্ত কর্মীদের শিফটিং ডিউটি করতে হয়। কখনও তাঁদের কাকভোরে ছুটতে হচ্ছে কাজের জায়গায়। কখনও আবার ডিউটি করতে হচ্ছে রাতভর। ফলে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বা লাইফস্টাইলে এমন কিছু পরিবর্তন আসছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শরীর ও মনে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাতে গাড়ির ব্যবস্থা থাকে না বলে নাইট ডিউটি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১১-১২ ঘণ্টা রাখা হয়। এরকম ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ঘুমের। আমাদের খাওয়াদাওয়া বা ঘুম—সবই হওয়া উচিত নির্দিষ্ট সময় অন্তর। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলে ‘সরকার্ডিয়ান রিদম’। এই ‘রিদম’ বা ছন্দ নষ্ট হয়ে যায় নাইট ডিউটি থাকলে। মর্নিং বা ইভনিং সিফ্টের ক্ষেত্রেও এমন সমস্যা হয়। ‘সারকার্ডিয়ান রিদম’ নষ্ট হয়ে যায় বলেই সকালে কর্মস্থল থেকে ফেরার পর ঘুম আসতে চায় না অনেকের। যথেষ্ট ঘুম না হলে তার প্রভাব তো পড়বেই। অবসাদ, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলি বাড়ে। সেক্ষেত্রে পরামর্শ, রাতভর ডিউটি থাকলে প্রয়োজনে ঘর অন্ধকার করে অন্তত ঘণ্টা ছয়েকের ঘুম দিতেই হবে। টানা দু’-তিনদিন কেউ নাইট ডিউটি করলে তারপর একদিন ছুটি (ডে অফ) দেওয়া উচিত। সেদিন বেশিক্ষণ ঘুমিয়ে ‘বকেয়া’ শোধ করতে হবে। তবেই শরীর ঠিক থাকবে।
টানা ১১-১২ ঘণ্টার ডিউটি হলে তার মধ্যেই সময় বার করে কিছুক্ষণ গড়িয়ে নিতে পারলে ভালো হয়। ডিউটির মধ্যেই সময়ে খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। শিফটিং ডিউটির তালিকা যতটা সম্ভব আগেভাগে কর্মচারীদের জানিয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে সেই মতো মানসিক প্রস্তুতি থাকবে কর্মীর। তাতে কাজও যেমন ভালো হবে, শরীর-মনের উপর প্রভাবও পড়বে কম।
সুগার, প্রেশার, লিভারের সমস্যার মতো ‘কোমর্বিডিটি’ থাকলে এমনিতেই কর্মক্ষমতা কমে যায়। এসব সমস্যা নিয়েও যাঁরা বিভিন্ন শিফট-এ ডিউটি করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের বলব, কাজের ফাঁকে হাল্কা বিশ্রাম নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। ডিউটি শেষে যাঁরা নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে ফেরেন, তাঁরা অবশ্যই একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর বেরন। তবে কারও হার্টের সমস্যা থাকলে (পাম্পিং ক্ষমতা ৪০ শতাংশের নীচে হলে) বা খিঁচুনি জাতীয় সমস্যা থাকলে নাইট ডিউটি না করাই ভালো।
গুরুপাক খাদ্য এড়িয়ে চলুন। অর্থাত্ খুব বেশি তেল মশলা দেওয়া খাবার খাওয়া চলবে না। দরকারে টিফিন বাক্সে করে খাবার নিয়ে যান। এড়িয়ে চলুন ধূমপান। সারাদিনে যে কোনও সময় হাল্কা শরীরচর্চা অবশ্যই করবেন।