প্রসূতি ও সদ্যোজাতের যাতায়াতের অ্যাম্বুলেন্স খরচ বাবদ অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বঞ্চনা প্রকট হয়ে উঠছে। গত দু’বছরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন খাতে বকেয়া কয়েক হাজার কোটি টাকা মেটানো দূর-অস্ত, কানাকড়িও দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
বাংলার সরকারি হাসপাতালে প্রতি বছর যে ১০ লক্ষ প্রসূতি সন্তান জন্ম দেন, তাদের ও সদ্যোজাতের যাতায়াতের অ্যাম্বুলেন্স খরচ বাবদ চার আনা পয়সাও দিচ্ছে না তারা। শুধু এই খাতেই প্রতি বছর রাজ্যের পাওনা হয় ১৮০ কোটি টাকা। রাজ্যের ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মানবিকতা জলাঞ্জলি দিলেও বিপদে যথারীতি পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে রাজ্য বাজেটে বিশেষ প্রধান্য দিয়ে এই টাকা মেটানো হচ্ছে।
বর্তমানে প্রসবের জন্য এবং মা ও তাঁর এক বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিখরচায় অ্যাম্বুলেন্স মেলে। তিনটি করে রাইড ফ্রি পাওয়া যায়। বাড়ি থেকে আসন্নপ্রসবাকে নিয়ে আসতে, সন্তান জন্মের পর তাকে ও মাকে বাড়ি পাঠাতে এবং প্রসবজনিত জটিলতার জন্য প্রসূতিকে অন্য হাসপাতালে রেফার করতে হলে এই সুবিধা মেলে। এই কাজের জন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতে দু’ধরনের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু আছে। একটি হল ‘নিশ্চয় যান’। অন্যটি ‘১০২’ অ্যাম্বুলেন্স। প্রায় ২২০০ নিশ্চয় যান এবং প্রায় এক হাজার ‘১০২’ অ্যাম্বুলেন্স রোজ এই কাজ করে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশই হল মা ও সন্তানের স্বাস্থ্য। সময়ে প্রসব, নিরাপদ প্রসব, সময়ে আধুনিক চিকিৎসা পাওয়া— সবটাই নির্ভর করছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার উপর।
কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পের মূল খরচ মোদী সরকারেরই বহন করার কথা। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘মাসে এই খাতে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ পড়ে। বছরে খরচ পড়ে ১৮০ কোটি। তার মধ্যে ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের বিল মেটাতে খরচ হয় প্রায় ৭০-৭৫ কোটি। টাকার এই অঙ্ক কেন্দ্রীয় বাজেটের নিরিখে সমুদ্রের এক মগ জলও নয়। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু আটকানোর মতো স্পর্শকাতর বিষয়, যার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের সম্মান জড়িত।