অভিষেকের প্রশ্নের জবাবে বাংলাকে বঞ্চনার বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিল কেন্দ্র
সংসদে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রশ্ন করেন এবং তার যে উত্তর আসে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে তাতে প্রকাশ্যে চলে এসেছে বাংলাকে বঞ্চনার খতিয়ান। জল–বিদ্যুৎ খাতে যে টাকা ব্যয় করে গ্রামোন্নয়ন করার কথা কেন্দ্রের তা কতটা হয়েছে জানতে চান অভিষেক। জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলার গ্রামীণ এলাকায় ৪৬.২০ শতাংশ বাড়িতে এখনও নেই পানীয় জলের কল। আর দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনায় রাজ্যের মাত্র ২২টি গ্রামে ২৪ ঘণ্টার বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা হয়েছে।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, আর ডিএসএস প্রকল্পে বাংলার জন্য যে কোনও অর্থই বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র, তা মেনে নিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এই বঞ্চনার পাশাপাশি অফ গ্রিড সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও বঞ্চনা করা হয়েছে বাংলাকে তা বেরিয়ে এসেছে। অথচ মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ত্রিপুরা–সহ সাতটি রাজ্যকে এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়েছে। এদিন অভিষেক তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন। এক, রাজ্যজুড়ে গ্রামীণ কতগুলি বাড়িতে এখনও ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই? দুই, রাজ্যজুড়ে গ্রামীণ কতগুলি বাড়িতে এখনও পানীয় জলের কল নেই? এবং তিন, এই সমস্যায় কেন্দ্রীয় সরকার সমাধান করতে কী কী পদক্ষেপ করেছে?
অন্যদিকে প্রথম প্রশ্নেই বেরিয়ে এসেছে বঞ্চনার তথ্য। রাজ্যের মাত্র ২২টি গ্রামে ২৪ ঘণ্টার বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা হয়েছে। আরডিএসএস প্রকল্পে কোনও অর্থ বাংলার জন্য বরাদ্দই হয়নি। অফ গ্রিড সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য তথ্য নেই। ২২টি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলা হলেও সেইসব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছিল কিনা সেটা খোলসা করা হয়নি। অথচ দাবি করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু সাল, তারিখ, পরিসংখ্যান দিয়ে দেখা যাচ্ছে বিষয়টি সত্য নয়। ফলে বঞ্চিত হয়েছে বাংলা। কারণ দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা এবং সৌভাগ্য প্রকল্প দুটিই বন্ধ হয়ে যায় ২০২২ সালের ৩১ মার্চ তারিখে।
এছাড়া ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, জল জীবন মিশন, স্বাস্থ্য মিশন, শিক্ষা মিশন, ওবিসি স্কলারশিপ–সহ একাধিক প্রকল্পের টাকা রাজ্যকে দেয়নি কেন্দ্র।