শীতকালীন অধিবেশনে ১৬টি বিল পাশ করানোর জন্য তালিকাভূক্ত করেও তা হল না, লোকসভায় পাশ মাত্র চারটি বিল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হট্টগোলের মধ্যে শুক্রবার শেষ হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। গত ২৫ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর, অধিবেশনে ১৬টি বিল পাশ করানোর জন্য তালিকাভূক্ত করেও তা হল না। লোকসভায় পাশ হল মাত্র চারটি বিল। রাজ্যসভায় তিন। আচমকা সামনে আনা ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন পেশ করতেই সরকারকে খেতে হয়েছে হিমশিম।
অধিবেশন শেষে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সাংবাদিক সম্মেলনে বলেই ফেললেন, আমরা চাইলে হল্লার মধ্যে জোর করে বিল পাশ করাতেই পারতাম। আগে অনেক সময়ই যা হয়েছে। তবে এবার তা করা হয়নি। এবার অধিবেশনে বিরোধীদের বিক্ষোভ প্রতিবাদের জেরে বারবার মুলতুবির ফলে লোকসভায় নষ্ট হয়েছে ৬৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। রিজিজু বলেন, বিরোধীদের কাছে আমার করজোরে আবেদন, আগামী দিনে সভা চলতে দিন।
প্রয়োজনে রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী নেতানেত্রীর বাড়িতে গিয়েও আবেদন করব। বাজেট অধিবেশন যাতে মসৃণভাবে চলে। এবার ১ ফেব্রুয়ারি হল শনিবার। সংসদ সাধারণত শনি-রবি ছুটি থাকে। ফলে সেইদিনই কি বাজেট পেশ হবে? জানতে চাওয়ায় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, শনিবার পড়েছে। তবে তো দেখতে হবে। এখনও অবশ্য এ ব্যাপারে সরকারের অন্দরে আলোচনা হয়নি।
অধিবেশনের শেষদিনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার আহ্বানে চা চক্রে হাজির হন সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতানেত্রীরা। এদিন অবশ্য সম্মিলিত বিরোধীরা তা ‘বয়কট’ করল। প্রথা মেনে ডাকা হয়েছিল বিরোধীদের। কিন্তু ‘বন্দেমাতরম’ বাদ্য সঙ্গীতের মাধ্যমে শুক্রবার অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হওয়ার পরেই কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল এবং কে সুরেশ তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যান। লোকসভার কক্ষে। জানতে চান আপনারা কি স্পিকারের চেম্বারে চা খেতে যাচ্ছেন নাকি?
সুদীপবাবু কিছু জবাব দেওয়ার আগেই তাঁর হাত চেপে ধরে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব জানিয়ে দেন, হম লোগ নেহি যা রহে হ্যায়। সেই মতো কোনও বিরোধী দলের সাংসদই ওই চা চক্রে যাননি। পরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইন্ডিয়া জোট একসঙ্গেই আছে। এক দেশ এক নির্বাচন সংক্রান্ত বিল পেশের দিন সম্মিলিত বিরোধীরা ভোট দিয়ে যেভাবে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে, একইভাবে একযোগে চা চক্র বয়কটও। এদিনও সংসদ চত্বরে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে অমিত শাহর মন্তব্যের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে আলাদা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল। বিজয় চক থেকে সংসদ ভবন কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের মিছিলে অংশ নেয়নি তৃণমূল। তবে সুদীপবাবু বলেন, ইন্ডিয়া জোটেই আছি। এ ব্যাপারে কোনও বিতর্ক নেই। কংগ্রেস নিজের মতো করে এজেন্ডা তৈরি করেছে বলেই অনেক ইস্যুতে আমরা অংশ নিইনি। তবে মোদি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের কোনও ফাটল নেই।