হলুদের কেরামতি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সেই প্রাচীন কাল থেকেই আমাদের দেশে হলুদের গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু যে রান্নায় হলুদ ব্যবহার করা হয় তাই নয়, সুন্দর ত্বক পেতে হলুদের প্যাক মাখারও চল রয়েছে। হলুদ তা সে কাঁচাই হোক বা রান্নায় ব্যবহৃত গুঁড়ো হলুদ— দুইভাবেই হলুদ একজন ব্যক্তির সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। খালি পেট নাকি ভর্তি পেট? যেভাবেই হলুদ খান তা উপকারে আসবে।
এমন কোনও বজ্রকঠিন বিধিনিষেধ নেই যে একেবারে সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে হলুদ খেতে হবে। নানা সময়েই দেখা গিয়েছে খালি পেটে হলুদ অনেকেই সহ্য করতে পারেন না। অতএব সকালে ব্রেকফাস্টের পরেও হলুদ খেতে পারেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রোজ ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদই যথেষ্ট। সকালে ও রাতে দুই বেলায় ২৫০ মিলিগ্রাম করে হলুদ খাওয়া যেতে পারে। সকালে খালি পেটে হলুদ খাওয়ার পর আধ ঘণ্টা কিছু না খাওয়াই উচিত। অন্যদিকে রাতে ঘুমোনোর আগে হলুদ-দুধ খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন এর থেকে বেশি পরিমাণে হলুদ খাবেন না যেন, তাতে ক্ষতি হতে পারে।
হলুদ অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এছাড়া হলুদে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি। ফলে খাদ্যের মাধ্যমে নিয়মিত হলুদ খেলে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ দূরে থাকে।
আমরা কথায় কথায় নিম হলুদ মাখার কথা বলি। আসলে নিম এবং হলুদ উভয়ের মধ্যেই রয়েছে অত্যন্ত জরুরি জীবাণুনাশক গুণ।
হলুদ গ্যাস-অম্বল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা হলুদে গ্যাস-নিরোধক উপাদান রয়েছে। তাই তো নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্য়া থেকে নিস্তার পাওয়া যায়।
কাঁচা হলুদ মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনশিয়া-সহ মস্তিষ্কের বেশ কিছু সমস্যা কয়েক হাত দূরে চলে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মস্তিষ্কে যে সমস্যাগুলি দেখা দেয়, তা দূরে সরিয়ে রেখে ব্রেনকে আরও সজাগ করে তোলে কাঁচা হলুদ।
শুধু হলুদ খাওয়া অনেকের পক্ষেই যন্ত্রণাদায়ক। হলুদের স্বাদ অনেকের পছন্দ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে হলুদের সঙ্গে একটু গুড় মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। হলুদ আমাদের লিভারকে রক্ষা করে। মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ায়।
মাংসের মধ্যে অনেকখানি মাত্রায় ফ্যাট থাকে। নিয়মিত মাংস খেলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে হলুদ মেশানো হলে শরীরে কোলেস্টেরল মিশে যাওয়ার মাত্রা কমে।
হলুদে আছে সক্রিয় কারকিউমিন। কারকিউমিন ফ্যাট সলিউবল। অর্থাত্ রান্নার তেলে খুব সহজেই মিশে যায়। তাই পুষ্টিগুণ নিয়ে চিন্তার প্রয়োজন নেই। যেভাবেই খান না কেন উপকার হবেই।
চন্দন, হলুদ, মধু, সামান্য তুলসী পাতা একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে মাখা যায়। এই পেস্ট ব্রণ, কালো ছোপ, বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
ঋতু পরিবর্তনের বেলা এখন। এছাড়া সামনেই শীতকাল। ফলে অ্যালার্জি জনিত হাঁচি, কাশি, সর্দি অনেকের শুরু হবে। এছাড়া অনেকের ধুলোতেও থাকে অ্যালার্জি। নিয়মিত হলুদ খেলে সেই অ্যালার্জির প্রকোপও কমতে থাকে।