‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ মামলার তদন্তে নেমে বিরাট প্রতারণা চক্রের হদিশ পেল রানাঘাট পুলিস
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাইবার প্রতারণায় সাম্প্রতিক সংযোজন ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’। এই ধরণের একটি মামলার তদন্তে নেমে বিরাট প্রতারণা চক্রের হদিশ পেয়েছে রানাঘাট পুলিস। চারটি রাজ্যে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৩ জনকে। যা রানাঘাট পুলিসের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে মনে করছে জেলার প্রশাসনিক মহল।
ডিজিটাল অ্যারেস্ট সংক্রান্ত একটি প্রতারণা হয় কল্যাণীতে। এক অবস্থাপন্ন বয়স্ক ব্যক্তিকে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া হয় প্রায় ১ কোটি টাকা। ওই ব্যক্তি প্রথমে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর মামলাটি খতিয়ে দেখার ভার যায় রানাঘাট পুলিস জেলার সাইবার ক্রাইম থানায় হাতে। তারা তদন্ত শুরু করতেই ফাঁস হতে থাকে একের পর এক চাঞ্চল্যকর সূত্র। ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্রের খোঁজ পায় মহারাষ্ট্র, গুজরাট, হরিয়ানা, দিল্লির সহ একাধিক রাজ্যে। টানা প্রায় একমাস ওইসব রাজ্যে হানা দেয় রানাঘাট পুলিস জেলার সাইবার থানার একটি বিশেষ দল। আর তাতেই জালে ওঠে ১৩ জন সাইবার অপরাধী।
পুলিস সূত্রের খবর, সাধারণত বয়স্ক এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে অপটু লোকজনকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করার টার্গেট নেয় সাইবার প্রতারকরা। উড়ো ফোনে নিজেকে পুলিসের পদস্থ কর্তা অথবা কোনও বিচারক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ভুয়ো কারণ দেখিয়ে ‘অ্যারেস্ট’ করা হয়। ভিডিও কলে দেখানো হয়, চেম্বারে বসে রয়েছে খাঁকি পোশাক পরিহিত এক পুলিশকর্তা। যাঁর কাঁধে জ্বলজ্বল করছে নির্দিষ্ট পদের ‘ইন্সিগনিয়া’।
এরপর নানাভাবে ‘শিকার’কে ভয় দেখাতে শুরু করে। ভীত-সন্ত্রস্ত ব্যক্তি মুক্তির উপায় খোঁজে। তখনই তাঁকে মোটা টাকার বিনিময়ে জামিন বা ছাড়পত্র দেওয়ার দেওয়ার আশ্বাস দেয় প্রতারকরা। প্রাথমিকভাবে ‘অ্যারেস্ট’ হওয়া ব্যক্তি টাকা দিতে না চাইলে দীর্ঘক্ষণ ভিডিও কল করে আটকে রাখা হয়। ভুয়ো কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে তাঁর বিশ্বাসও অর্জন করা হয়। একইভাবে কল্যাণীর ওই বৃদ্ধের কাছেও ফোন আসে এবং তাঁকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হয়। তদন্ত এগোতেই স্পষ্ট হয়, প্রতারণার জাল প্রসারিত একাধিক রাজ্যেও। শুরু হয় রানাঘাট সাইবার ক্রাইম বিভাগের অভিযান।