পরিবহণ দপ্তরের বেহাল দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বৃহস্পতিবার রাজ্যস্তরের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের বেহাল দশা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে কড়া বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে মানুষ বাস পাচ্ছেন কি না, পরিবহণ মন্ত্রীকে তা শহর ঘুরে পরিদর্শনের নির্দেশও দিয়েছেন।
স্নেহাশিসবাবুর উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অফিস ছুটির পর বাসের জন্য কত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন, তা নিয়ে পরিবহণ দপ্তর কোনও সমীক্ষা করেছে? কোন কোন এলাকায় বাসের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো যেতে পারে, তা কি দেখা হয়েছে? আমি নিজে বহু বার দেখেছি, বহু মানুষ বাসের জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে রয়েছেন। পরিবহণ মন্ত্রী কি নিজে কখনও ভিজিট করেছেন?’ একের পর এক প্রশ্নের উত্তরে কার্যত অপ্রস্তুত পরিবহণ মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘বাসের ফ্রিকোয়েন্সি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।’ তাঁর এই সংক্ষিপ্ত উত্তর শুনেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘মানুষ যাতে ভালোভাবে অফিস যেতে পারেন এবং বাড়ি ফিরতে পারেন তা তোমাকে দেখতে হবে। কাজের দিন শহরের সর্বত্র ভিজিট করতে হবে। শুধু এক জায়গায় নয়, সর্বত্র পরিদর্শন করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি তালুক থেকে হাসপাতালের ভিজিটিং আওয়ার এর পর কী অবস্থা হয়, তা পরিদর্শন করতে হবে।’
পরিবহণ দপ্তরের পাশাপাশি শহরের যান নিয়ন্ত্রণে পুলিসের ভূমিকা নিয়েও এদিন নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিসের উদ্দেশে সাফ জানান, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে কোনওরকম ব্যবস্থা নিতে হবে। বলেন, ‘রাতের দিকে ট্রাফিক পুলিসের কেউ রাস্তায় থাকে না। প্রত্যেক রাস্তায়, এমনকি জাতীয় সড়কেও যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। যন্ত্র রাখতে হবে।’ এরপরই যানজট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায়। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দুর্দশার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কি কোনও ব্যবস্থা করা যায় না? কলকাতা পুলিস, হাওড়া পুলিস, বিধাননগর পুলিস কি একসঙ্গে বসে ব্যবস্থা করতে পারে না? যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কিছু উপায় বের করতেই হবে।’
অন্যদিকে, যানজটের জন্য ফ্লাইওভার বন্ধ করে দেওয়া কোনও সমাধান হতে পারে না বলেও সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘সন্ধ্যা ছ’টার পর মা ফ্লাইওভার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পুলিসের সব থেকে সহজ কাজ হল বন্ধ করে দেওয়া। কোনও ভিআইপি গেলে বাড়িঘর দোকানপাট সব বন্ধ করে দেয়। সেসব চালু রেখে কি করা যায় না? মা ফ্লাইওভার, এজেসি বোস রোডে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগ বেধে দিতে হবে। ফাঁকা জায়গা ব্লক করতে হবে যাতে কেউ গাড়ি না ঘোরাতে পারেন।’