মেরুপ্রদেশ থেকে সুন্দরবনের নদীতে ‘পরিযায়ী’ তিমি, দেখতে হুড়োহুড়ি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তিমি মানেই স্থলচর মানুষের কাছে রূপকথার জীব। গভীর সমুদ্রে ফোয়ারার মতো জল ছোঁড়ে যখন হাঁ হয়ে যান পোড় খাওয়া নাবিকরাও। পাখির ডানার মতো লেজ মেলে খেলে অতল জলে।
সুমেরু মহাসাগর ও অ্যান্টার্কটিকা থেকে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ সাঁতরে একটি ‘বালিন তিমি’ বুধবার এসে পৌঁছেছে কাকদ্বীপে। তারপরই তাকে নিয়ে হুড়োহুড়ি। কখনও ঘোড়ামারা দ্বীপের চরে আছাড়ি বিছাড়ি, কখনও কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীতে সাঁতার, আবার ভাটা হলেই নদীর পাড়ে, বুধ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবেই চরকি পাক খেয়েছে তিমি মাছটি। সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের মতে বালিন বিপন্ন প্রজাতির তিমি। খাদ্য হল, ছোট মাছ, কাঁকড়া, শামুক, বড় চিংড়ি। প্রজননের জন্য হাজার হাজার পথ সাঁতার দেয় উষ্ণ জলের খোঁজে। ‘তবে সুন্দরবনের নদীতে এমন একটি তিমি ঢুকে পড়ার ঘটনা এই প্রথম,’ দাবি জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সুন্দরবন আঞ্চলিক অফিসের। এই তিমিটি প্রায় ২০ ফুট লম্বা। অর্থাৎ হাতির দেড়-দু’গুণ আকার।
বুধবার বিকেলে সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপের রায়পাড়ার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে হুগলি নদীতে ভাটা হতেই মাছটিকে প্রথম দেখা যায়। নদী চরে উঠে এসেছিল সেটি। প্রচুর ভিড় জমে যায়। তাদের মধ্যে জনা পনেরো ব্যক্তি প্রাণীটিকে ঠেলে নদীর জলের কাছে নিয়ে যায়। জোয়ার আসার পর সে নদীতে নামে। বৃহস্পতিবার সকালে কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’নম্বর লক্ষ্মীপুরে বটতলা নদীর চরে ফের তার দেখা মেলে। ভাটার জন্য প্রাণীটি আটকে গিয়েছিল। বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই জোয়ার আসে। এবং সে নদীতে ভেসে যায়। এদিন বিকেলে আবার আরও দু’কিলোমিটার পূর্বে শিবকালীনগরের হারাণ হালদার পাড়ার কাছে তাকে একটি চরে দেখা যায়। সন্ধ্যা নাগাদ বনদপ্তরের কর্মীরা সেটিকে উদ্ধার করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘জোয়ার এলে তিমিটিকে গভীর সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’