দেশ বিভাগে ফিরে যান

জঙ্গল ঘিরে ফেলে অপারেশন, বিজাপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত ৩১ জন মাওবাদী

February 10, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে ইন্দ্রাবতী জাতীয় উদ্যানে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে মাওবাদী-দমন অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৩১ জন মাওবাদীকে নিকেশ করেছে। বিজাপুরের এই সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ২ জওয়ানও। জখম আরও ২।

ইন্দ্রাবতী ন্যাশনাল পার্ক। এর গভীর জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে মাওবাদীরা। এই ইনপুট মিলেছিল শনিবার রাতে। সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় ব্লু-প্রিন্ট। নাম ‘অপারেশন ন্যাশনাল পার্ক’। রবিবার ভোরের আলো ফুটতেই শুরু হয় অভিযান। ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি), স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ), বস্তার ফাইটার্সের ৬৫০-এর বেশি জওয়ান ঘিরে ফেলেন গোটা জঙ্গল। এরপর শুরু হয় বৃত্তের পরিধি কমানোর পালা। ঘন জঙ্গলের সুযোগ নিয়ে বৃত্তের বাইরে চলে এলেও একজনও মাওবাদী যাতে পালাতে না পারে, তৈরি ছিল সেই বিকল্প প্ল্যানও। সকাল ৮টা নাগাদ শুরু হয় তুমুল গুলি লড়াই। অরণ্যের নিস্তব্ধতাকে ভেঙে চুরমার করে দেয় বুলেটের শব্দ। প্রায় ২ ঘণ্টা পর নিঃস্তব্ধ জঙ্গল। শুরু ‘গিনতি’। ১, ২, ৩, ৪… একেবারে ৩১। প্রত্যেকের পরনে ‘ইউনিফর্ম’। নিথর দেহ। বাহিনীর গুলিতে ডেরাতেই ঝাঁঝরা তারা। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭, ইনসাস, এসএলআর, .৩০৩ রাইফেল, ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার্স, বিস্ফোরক সহ বিপুল অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ।

৩১ মাওবাদীর মৃত্যুর পরে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, “নকশালমুক্ত ভারত গঠনের লক্ষ্যে ছত্তীসগঢ়ে বড় সাফল্য পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই অভিযানে ৩১ নকশালের মৃত্যুর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। মানবতা বিরোধী নকশালবাদ বন্ধ করতে গিয়ে আজ আমরা দুই সাহসী জওয়ানকে হারিয়েছি।” শাহ আরও এক বার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ থেকে নকশালবাদ নির্মূল করবেন। উল্লেখ্য, গত বছর রায়পুরে মাও-হিংসা প্রভাবিত সাত রাজ্যের প্রশাসনিক শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী ২০২৬ সালের মার্চ মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলেন।

বিজাপুর বরাবরই মাওবাদী অধ্যুষিত বলেই পরিচিত। তবে সম্প্রতি বাহিনীর একের পর অভিযানে তারা যথেষ্ট কোণঠাসা। এবছর নিকেশ হওয়া ৮১ মাওবাদীর মধ্যে ৬৫ জনই বস্তার ডিভিশনের সাতটি জেলার। গতবছর ৪ অক্টোবর নারায়ণপুরা ও দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানা লাগোয়া আবুজমার এলাকায় বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছিল ৩৮ জনের। সবমিলিয়ে ২০২৪ সালে ছত্তিশগড়ে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছে মোট ২১৯ জন।

রবিবারের অভিযানে দু’জন আহত জওয়ানকে উদ্ধার করতে পাঠানো হয় একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। ওই হেলিকপ্টারে তাঁদের এয়ারলিফ্‌ট করে নিয়ে আসা হয় রায়পুরের এক হাসপাতালে। রায়পুরের সিনিয়র পুলিশ সুপার লাল উমেদ সিংহ জানিয়েছেন, আহত দুই জওয়ানের এক জনের পায়ে আঘাত রয়েছে। অপর জনের মাথায় এবং বুকে চোট রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bijapur, #operation, #maobadi

আরো দেখুন