বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় সরব তৃণমূল সাংসদ, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিতর্কিত ধারাটি সংশোধনের প্রস্তাব

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ‘অস্বাভাবিক’ যৌনমিলন শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়! স্ত্রী’র সঙ্গে ‘অস্বাভাবিক’ যৌনমিলনকে ধর্ষণ বলা যায় না৷ এমনকি স্ত্রী’র অসম্মতি ছাড়াও৷ ধর্ষণ এবং অন্যান্য অভিযোগে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত জগদলপুরের এক বাসিন্দাকে বেকসুর মুক্তি দিল ছত্তিশগড় হাইকোর্ট৷
এই মামলার রায়ে বিচারপতি নরেন্দ্র কুমার ব্যাস বলেন, “যদি স্ত্রী’র বয়স ১৫ বছরের বেশি হয়, তাহলে স্বামী স্ত্রী’র যে কোন ধরনের যৌনমিলনকে ধর্ষণ বলা যাবে না৷ কারণ স্ত্রী’র সম্মতি না-থাকলে স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্ক গুরুত্ব হারায়৷”
এই বিতর্কিত রায়ের পর বুধবার রাজ্যসভায় সরব হলেন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা ডেরেক ও-ব্রায়েন। তিনি গত সপ্তাহে ব্যক্তিগত সদস্যের একটি বিল উত্থাপন করে বলেন যে, “ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে যে ‘ব্যতিক্রমী’ বার্তা দেওয়া আছে তা অত্যন্ত আদিম একটি ধারণা পোষণ করে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এটি মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করে। তাদের স্বাধিকার, সমতা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে।
তৃণমূল নেতা এই আইনটিকে ঘোর পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও ব্রিটিশ শাসনের একটি কুফল বলে অভিহিত করে বলেন, এই নিয়মটি পরিবর্তনের একাধিক সুপারিশ সত্ত্বেও উদাসীন কর্তৃপক্ষ। এই আইন প্রণয়নের আগে সংসদের একাধিক সদস্য যৌথভাবে এই ‘ব্যতিক্রম’ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
“ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নারীর যৌনতায় সম্মতি বা অসম্মতির অধিকার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আদালত যদি প্রজনন বিষয়ে মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যের অধিকার দিয়ে থাকে তবে যৌনতা বিষয়ে কেন নয়! বিবাহের মধ্যে নারী সম্মতির অধিকারকে অস্বীকার, লিঙ্গ-বৈষম্য সংক্রান্ত জটিলতা ও হিংসাকে আরও প্রশ্রয় দেয়। এমন একটি মধ্যযুগীয় ধারাকে এখনও টিকিয়ে রাখা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা।” – তিনি বলেন।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ ধারা অনুসারে, “একজন পুরুষ তার স্ত্রীর ইচ্ছার অনুপস্থিতিতেও তার সঙ্গে যৌন মিলন বা যৌন ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত হলে ( যদি স্ত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম না হয় ) তাকে ধর্ষণ বলা যাবে না।”