জামতাড়া গ্যাংয়ের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছতে রাজ্য পুলিসের সাইবার ক্রাইম উইং শুরু করেছে ‘সাইবার শক্তি’ অভিযান

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্য পুলিসের সাইবার ক্রাইম উইং এবার শুরু করল ‘সাইবার শক্তি’ অভিযান। আর তিনদিনের অপারেশনেই ধরা পড়ল ৪৬ জন সাইবার প্রতারক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৮০টি সিমকার্ড, মোবাইল ফোন। ফ্রিজ করা হয়েছে একশোর বেশি মিউল অ্যাকাউন্ট।
এক মাস ধরে বীরভূমের খয়রাশোল, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেট, পূর্ব বর্ধমান ও চন্দননগর কমিশনারেট এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ এসেছে। দেখা যায়, সেক্সটরশন, গ্যাসে ভর্তুকির নামে টোপ, ডিজিটাল অ্যারেস্ট, ভুয়ো বিনিয়োগের টোপ দিয়ে চলছিল টাকা হাতানোর কারবার। অভিযোগ পাওয়ার পরই পদক্ষেপ করে সাইবার ক্রাইম উইং। অপারেশনের নাম দেওয়া হয় ‘সাইবার শক্তি’।
সবমিলিয়ে ২৫০টি অভিযোগ জমা পড়ে। তদন্তে ধরা পড়ে, ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা খোয়া গিয়েছে সাধারণ মানুষের। যে নম্বর থেকে জালিয়াতরা ফোন করত, সেগুলির ডেটা বিশ্লেষণ শুরু হয়। দেখা যায়, বেশিরভাগ সিমই ভুয়ো নথি জমা দিয়ে তোলা। যে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে, তার ট্রানজাকশন আইডি ধরে খুঁজে বের করা হয়, কোন নম্বর ব্যবহার হয়েছে টাকা তোলার সময়। সেই সূত্র ধরেই খয়রাশোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। তদম্তকারীরা দেখেন, তারা জামতাড়া গ্যাংয়ের সদস্য। আর পাঁচটা সাইবার জালিয়াতির মতো এখানেও প্রতারকরা ব্যবহার করেছে ভাড়ার অ্যাকাউন্ট। চার-পাঁচটি লেয়ার রাখা হয়েছে টাকা ট্রান্সফারে। অ্যাকাউন্ট লেনদেনের সূত্র ধরে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার জানান, ‘অভিযান এখনও শেষ হয়নি। আরও গ্রেপ্তারির সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে জামতাড়া গ্যাং ঘাঁটি গেড়েছে বাংলায়। বাড়ি ভাড়া নিয়ে গত এক মাস ধরে চলছে একের পর এক অপারেশন। আর তারপরই গা ঢাকা। কখনও ডিজিটাল অ্যারেস্ট আবার কখনও বিনিয়োগের নামে সাইবার জালিয়াতি। এটাই এখন বাংলায় মোডাস অপারেন্ডি জামতাড়া গ্যাংয়ের। এর শিকড় পর্যন্ত পৌঁছতেই রাজ্য পুলিসের সাইবার ক্রাইম উইং শুরু করেছে এই ‘সাইবার শক্তি’ অভিযান।