সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্দেশের কোনও তোয়াক্কা না-করেই ১১ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে, প্রতিবাদে অনশন লোকো পাইলটদের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্টেশনে রেল দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে । আর একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনার খবর যাত্রীদের বেশ কিছুটা হলেও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করে একাধিক বিষয় সামনে এনেছে কর্তৃপক্ষ। এই প্রসঙ্গে একাধিকবার কবজ ব্যবস্থা চালু করা নিয়েও সওয়াল করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে অতিরিক্ত কাজের চাপ এবং বিশ্রামের অভাবকে দায়ী করেছেন লোকো পাইলট এবং ট্রেন ম্যানেজারদের একাংশ। এই বিষয়ে একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হলেও কোনও কাজ না-হওয়ায় শুক্রবার সকাল 8টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টার অনশনে বসে ছিল অল ইন্ডিয়া লোকো রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন।
এই অনশন কর্মসূচিতে সারা দেশ জুড়ে যোগ দিয়েছিলেন দেশের ১৭টি জোনের লোকো পাইলট এবং ট্রেন ম্যানেজাররা। দেশব্যাপী প্রায় ৯০ হাজার চালক ও ট্রেন ম্যানেজার অনশন চালিয়েছেন। রাজ্যে অনশনরত ছিলেন প্রায় ২০ হাজার কর্মী। তবে অনশন কর্মসূচির ফলে যাতে ট্রেন চলাচল ব্যাহত না-হয়, সেদিকেও নজর ছিল সংগঠনের।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শৈলেশ প্রসাদ সিং জানিয়েছেন যে রেলের নিয়ম অনুযায়ী, চালকদের 8 ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। কিন্তু, সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্দেশের কোনও তোয়াক্কা না-করেই চালকদের দিয়ে ১১ ঘণ্টা কাজ করানো হচ্ছে। এমনকী পণ্যবাহী ট্রেনের চালকদের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করানোর অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি চালকদের সপ্তাহে দু’রাতের বেশি নাইট ডিউটি দেওয়া যাবে না, এমনটাই নিয়ম রয়েছে৷ কিন্তু, সেই নিয়মও মানা হচ্ছে না। নিয়ম না-মেনে চালকদের ৪ রাত পর্যন্ত কাজ করানো হচ্ছে।
আজ কর্মীরা অভিযোগ তোলেন যে প্রত্যেক সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত এবং প্রত্যেকদিন ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিশ্রামের নিয়ম রয়েছে৷ তবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে না চালক এবং ট্রেন ম্যানেজারদের। এছাড়াও ৩৬ ঘণ্টার বেশি একজন লোকো পাইলট আউট স্টেশন ডিউটি করবে না৷ এই নিয়মটিও মানছে না রেল মন্ত্রক। সপ্তম বেতন কমিশনে বৈষম্যের অভিযোগও তোলেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, লোকো পাইলটদের চাপ দেওয়া হচ্ছে কারণ সারা দেশ জুড়ে প্রায় ৩ লক্ষ ২০ হাজারের মতো শূন্যপদ রয়েছে৷ যেগুলিকে ভরা হচ্ছে না ৷ ফলে যারা কর্মরত রয়েছেন তাঁদের উপর বাড়তি চাপ দেওয়া হচ্ছে ।