দোষী সাব্যস্ত রাজনীতিবিদদের উপর আজীবন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ‘বড্ড কঠোর’ পদক্ষেপ, সুপ্রিম কোর্টে জানাল মোদী সরকার

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দোষী সাব্যস্ত নেতা-মন্ত্রীদের ভোট-রাজনীতি থেকে আজীবন বিরত রাখতে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। যদিও নরেন্দ্র মোদী সরকার এদিন হলফনামা পেশ করে সেই আর্জির বিরোধিতা করেছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, দোষী সাব্যস্ত রাজনীতিবিদদের উপর আজীবন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ‘বড্ড কঠোর’ পদক্ষেপ হবে। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কতদিনের হওয়া উচিত, সেবিষয়ে সংসদ আগেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আর বিষয়টি শুধুমাত্র সংসদের এক্তিয়ারে পড়ে।
উপাধ্যায় নিজের আবেদনে ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনের ৮ এবং ৯ নম্বর ধারাকে চ্যালঞ্জ জানিয়েছেন। ওই আইনের ৮ (১) ধারায় ফৌজদারি মামলায় নেতা-মন্ত্রীদের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিন থেকে ছ’বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছে। আর ইতিমধ্যেই যাঁরা জেলে রয়েছেন, তাঁরা মুক্তির দিন থেকে ছ’বছর পর্যন্ত ভোটে প্রার্থী হতে পারেন না। ওই আইনের ৯ ধারায় দুর্নীতি বা আনুগত্যহীনতার দায়ে সরকারি কর্মীদের উপর পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছে। উপাধ্যায় অবশ্য উভয় ক্ষেত্রেই আজীবন নিষেধাজ্ঞা চাপানোর দাবি তুলেছেন।
২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট এব্যাপারে একটি রায় দিয়েছিল। উচ্চ আদালত স্পষ্ট জানায়, অন্তত দু’বছর কারাবাসের সাজা হলে সঙ্গে সঙ্গে সংসদ বা বিধানসভা থেকে সংশ্লিষ্ট এমপি বা এমএলএ-কে বহিষ্কার করতে হবে। যদিও এই রায় বাতিল করতে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে তৎকালীন মনমোহন সিং সরকার। এর প্রবল বিরোধিতা করে বিজেপি ও বামেরা। এমনকী স্বয়ং রাহুল গান্ধী ওই অর্ডিন্যান্সকে ছিঁড়ে ফেলার কথা বলেছিলেন। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত মনমোহন সরকারকে পিছু হটতে হয়। বাতিল হয় অর্ডিন্যান্সটি। ঘটনাচক্রে ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর মানহানি মামলায় দু’বছরের কারাদণ্ড হয় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর। এবং ওই অর্ডিন্যান্স না থাকার সুবাদে সঙ্গে সঙ্গেই সংসদ থেকে তাঁকে বহিষ্কৃত হতে হয়। অবশ্য পরে শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে স্বমহিমায় লোকসভায় ফিরে আসেন তিনি।