বার্ধক্য ভাতা প্রদানের কোটা বাড়াতে ব্যর্থ মোদী সরকার, ভুগতে হচ্ছে রাজ্যকে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পশ্চিমবঙ্গে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের অধীনে বৃদ্ধ, বিধবা ও বিশেষভাবে সক্ষমদের মাসিক ভাতা দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই তিন ক্ষেত্রে মোট এক কোটির কাছাকাছি নাগরিককে প্রতিমাসে মাথাপিছু ১০০০ টাকা দেওয়া হয়। তার মধ্যে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ প্রকল্প এনএসএপির অধীনে বার্ধক্য ভাতা প্রাপক রয়েছেন ২০ লক্ষ ৬৭ হাজার। এই সংখ্যক উপভোক্তাদের প্রত্যেকের জন্য মাত্র ৩০০ টাকা দেয় কেন্দ্র। শুধুমাত্র ৮০ ঊর্ধ্বদের জন্য তারা ৫০০ টাকা করে দেয়। বাকি টাকা দেওয়া হয় রাজ্যের কোষাগার থেকে।
এইভাবে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে ঢোকে। শুধুমাত্র যৎসামান্য টাকা দিয়েই খালাস হওয়াই নয়, একদশকের বেশিকাল ধরে উপভোক্তার সংখ্যা এবং রাজ্যগুলির কোটা বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার। যেমন পশ্চিমবঙ্গের কোটা হল ২০ লক্ষ ৬৭ হাজার। অর্থাৎ, এর বেশি একজনকেও টাকা দেবে না নয়াদিল্লি। তাঁদের মধ্যে যদি কেউ মারা যান বা বাদ পড়েন, তাহলেই তাঁর জায়গায় নতুন কোনও উপভোক্তার নাম ঢোকে।
সম্প্রতি গ্রামবাংলায় সমীক্ষা চালিয়ে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে মোট ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার জনকে বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় কোটার অধীনে এরাজ্যের মাত্র দেড় লক্ষ ব্যক্তির নাম ঢোকানো সম্ভব। তাহলে বাকি ৬ লক্ষ ব্যক্তির কী হবে? সূত্রের খবর, এই সমস্ত প্রান্তিক মানুষকে সুরাহা দিতে বাংলার কোটা অন্তত ৬ লক্ষ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রকে বলা হয়েছে। শুক্রবার এই বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই দাবি জানানো হয় সেখানেই। আচমকা এই প্রস্তাবে কার্যত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান কেন্দ্রের উপস্থিত কর্তারা। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে কেন্দ্র যে দিশাহীন, তাও তাঁদের বক্তব্যে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের প্রশাসনিক মহল থেকে পাওয়া গিয়েছে এই ব্যাখ্যাই।
এনএসএপি প্রকল্পের উপভোক্তাদের জন্য কেন্দ্র ২০০ কোটি দিলে রাজ্যকে দিতে হয় ৬০০ কোটিরও বেশি টাকা। আবার প্রতিবছর বেনিফিসিয়ারিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে যাচাই পর্বও চলে। আর্থ-সামাজিক জাতি গণনার সাতটি নির্ণায়ক তথ্যের ভিত্তিতে এবছর বিশেষ সমীক্ষা চালানো হয়। তাতেই যোগ্য বার্ধক্য ভাতা প্রাপকদের নাম ঠিক হয়েছে। এই তথ্য হাতে নিয়েই শুক্রবার রাজ্যের কর্তারা বৈঠকে বসেন। অযোগ্য উপভোক্তাদের বাদ দিতে অনেক রাজ্যেই প্রতিবছর নিয়মমাফিক সমীক্ষা হয় না। ফলে সেখানে কোটা পূরণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সেক্ষেত্রে তাদের কোটা থেকেই বাংলার বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় কর্তারা অবশ্য এদিন কোনও আশ্বাস দেননি।