নবদ্বীপজুড়ে উৎসবের আমেজ, পালিত হল গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নদের নিমাই গোরাচাঁদের অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে সেজে উঠল নবদ্বীপ। বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপে দোল উৎসবের পরের দিন প্রথা মেনে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশনের উৎসব হয়। দোল পূর্ণিমা তথা গৌরাঙ্গের আবির্ভাব তিথির পরের দিন মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মহাপ্রভুর সহধর্মিনী বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর পরিবারের সদস্যরা এই অনুষ্ঠান করেন। নবদ্বীপের ধামেশ্বর গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরে শনিবার দুপুরে এই অন্নপ্রাশনের আয়োজন করা হয়।

শিশুর মতোই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর অন্নপ্রাশন হয়। দুধ খাওয়ানোর ঝিনুক বাটি, চুষনি কাঠি, ঝুনঝুনি, বল, মল, বালা, বাজু, কাজললতা সহ নানা উপকরণ থাকে অন্নপ্রাশনে। গীতা, ভাগবত সহ ধর্মগ্রন্থও দেওয়া হয়। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে লাল চেলি পরানো হয়। গলায় বেল আর গোলাপের মালা, নানা রকমের স্বর্ণালঙ্কারে সাজানো হয়।

নাটমন্দিরে ভোগের অন্ন থেকে বিভিন্ন ব্যঞ্জন, পিঠেপুলি, দই-মিষ্টি সাজিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ কুইন্টাল গোবিন্দভোগ চালের অন্ন, এক কুইন্টাল ২০ কেজি পুষ্পান্ন, এক কুইন্টাল দুধের পায়েস, প্রায় ৫৬ রকমের শাক, ৫৬ রকমের ভাজা, ব্যঞ্জন, ৫৬ রকমের চাটনি, ১০৮টি প্লেটে ৫৬ রকমের নানা পদের মিষ্টি ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়।

সারাদিন উপবাস থাকেন বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর বংশধররা। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু তাঁদের ঘরের জামাই। প্রিয় ৫৬ ভোগের রান্নার বিভিন্ন পদ নিষ্ঠা সহকারে তৈরি করেন বিষ্ণুপ্রিয়া পরিবারের সন্তানরা। কাঠের উনুনে গঙ্গার জল দিয়ে রান্না হয়। বিভিন্ন পদের ভাজা, শুক্তো, ডাল, হরেক রকমের ব্যঞ্জন, ছানার রসা ইত্যাদি রান্না করা হয়। মহাপ্রভুর প্রিয় কচুশাক, গর্ভ মোচার ঘণ্ট নিবেদন করা হয়। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর শ্রীবিগ্রহ ও শ্রীচরণ পাদুকাকে সামনে রেখে উৎসবের আয়োজন করা হয়।
