সংসদ যেন কুরুক্ষেত্র! শাহী আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা হুঙ্কার ‘মমতার সৈনিক’ তৃণমূল সাংসদের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বুধবার রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপর আলোচনা চালাকালীন রীতিমতো উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হল। তৃণমূল সাংসদ সাকেত রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখছেন আর দফায় দফায় বাধা দিচ্ছেন অমিত শাহ-সহ তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তৃণমূল সাংসদের একের পর এক মন্তব্য সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। বুধবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেই বার বার বিতণ্ডায় জড়িয়ে গেল তৃণমূল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সাকেত বলেন, “আমি কারও দয়ায় সাংসদ হইনি। তাই কাউকে ভয় পাওয়ারও প্রশ্ন নেই। আপনারা সংসদে সঠিক তথ্য দিন।” সাকেত গোখলের এই মন্তব্য রাজ্যসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়।
তৃণমূল সাংসদকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান পদ্ম শিবিরের রাজ্যসভার নেতা জেপি নাড্ডা, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজুসহ বিজেপি সাংসদেরা। বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সাকেত গোখলে বলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। ক্ষমা চাইব না। বিজেপির ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন। রাজ্যসভায় এদিন বিতর্কের শুরুতেই সুর চড়ায় জোড়াফুল শিবির। সাকেত বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে আলোচনা শুনতে রাজ্যসভায় উপস্থিত হয়েছেন দেখে ভাল লাগছে। ছ’মাসের জন্য জেলে পাঠানো হয়েছে এমন ৩৮ বছর বয়সি একজন সাংসদকে আলোচনা শুরুর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।” এরপরেই সাকেত বলেন, “জমিদারি মানসিকতা দেখা যাচ্ছে। রাজ্যগুলিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে মনে করছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের মতো একটি শক্তিশালী রাজ্য প্রথম থেকেই এর কড়া বিরোধিতা করে আসছে। রাজ্যে সিবিআই এবং অন্যান্য এজেন্সির প্রায় ৬ হাজার ৯০০টি মামলা বকেয়া রয়েছে।”
অমিত শাহ বলেন, “সিবিআই বা অন্য যেসব এজেন্সির কথা সাংসদ বলতে চাইছেন, তার কোনওটিই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন নয়। অথচ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা চলছে।” এরপরই মন্তব্য এবং পাল্টা মন্তব্যে তুমুল হট্টগোল শুরু হয় বিজেপি এবং তৃণমূল সংসদ সদস্যদের মধ্যে। তৃণমূলের সমর্থনে সরব হয় কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরাও। নাড্ডা দাবি করেন, “সাকেত গোখলেকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।” সাকেত মন্তব্য প্রত্যাহার না করায় এটি রাজ্যসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিরেন রিজিজু বলেন, উদার মানসিকতা নিয়ে সংসদে কথা বলুন। শুধু আক্রমণ করছেন, কোনও ইতিবাচক পরামর্শ দিতে পারলেন না। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “উদার মানসিকতা নেই বলেই রিজিজু, সাংসদকে (সাকেত গোখলকে) অপমান করছেন।”