অক্সফোর্ডে SFI-র ‘অসভ্য’ আচরণে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আরও পোক্ত হল

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মুকুটে নয়া পালক ঐতিহ্যবাহী অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। নাম না করলেও নিজেদের ওয়েবসাইটে অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর নারীশক্তির ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সুরক্ষায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন মমতা। সেই পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের পথ জানতেই আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। ‘দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের কাহিনি, ভারতের উন্নতির গল্প শোনার জন্য দর্শকরা মুখিয়ে ছিলেন। ভারতীয় সময় রাত ১১টায় কলেজ হাবে শুরু হয় একঘণ্টার অনুষ্ঠান। মমতার উদ্যোগে বাংলার নারীদের সশক্তিকরণ এবং সামাজিক উন্নয়নের গল্প। সঞ্চালক মমতার নাম ঘোষণা করতেই করতালিতে ফেটে পড়ে অডিটরিয়াম হল। লন্ডনস্থিত বাঙালি দর্শকদের সঙ্গে তখন উপস্থিত কেলগ কলেজের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর জোনাথন মিশি এবং এবং ফেলো লর্ড করণ বিলিমোরিয়া।
সামনের সারিতে বসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সামনেই গুটিকয় SFI-র বিক্ষোভকারীকে হাসি মুখে মোক্ষম জমা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিদেশের মাটিতে বাম ছাত্র সংসদের এহেন আচরণের সমালোচনায় সরব হয়েছে নানা মহল। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাটি আরও শক্ত হল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার মাঝে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি করেন এসএফআই-র কয়েক জন। রাজ্যের বিনিয়োগ পরিস্থিতি থেকে শুরু করে আরজি কর– বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। চিৎকার করেন, থামিয়ে দেন বক্তৃতা। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, ‘এখানে মিথ্যে কথা বলে আমাকে অপমান না করে বাংলায় গিয়ে নিজেদের দলকে শক্তিশালী করুন।’

ঘটনার কিছু পরে সোশ্যাল মাধ্যমে কেলগ কলেজের কিছু ছবি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্নকর্তাদের বেশির ভাগই সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের ইউকে ইউনিটের সদস্য। এর পরেই এ প্রসঙ্গে ফেসবুকে কড়া বার্তা বার্তা দেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ইউকে-তে এসএফআইয়ের ইউনিটের তরফ থেকে সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠান না করেন। দেবাংশুর কথায়, ‘কর্তৃপক্ষ ওদের দাবি মেনে না নেওয়ায় ওরা সভাগৃহে ঢুকে অসভ্যতা করল।’
তৃণমূল নেত্রী হিসেবে নয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে লন্ডনে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ কথা মনে করিয়ে দেবাংশু বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে সিপিএম যে নোংরামিটা করল, কলতলার স্টাইলে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করল, তাতে বাংলার মানুষের কাছে ওরা আরও ছোট হয়ে গেল। এভাবে আর যাই হোক, শূন্য থেকে ওরা বেড়ে উঠতে পারবে না।’
বিক্ষোভকারীদের ‘বাঁদরামি’র প্রতিবাদে X হ্যান্ডেলে তোপ দাগলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বিক্ষোভকারীরা ‘দেশ, বাংলার সম্মান ভাবে না’, বলেই কটাক্ষ তাঁর।
প্রসঙ্গত, বিরোধিতার মুখে পড়ে মেজাজ হারানো দূরে থাক বরং পোড়খাওয়া রাজনীতিকের মতোই, অত্যন্ত ধৈর্য ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতির সামাল দেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টার বক্তব্যের শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘একটা জনপ্রিয় গান আছে, ইফ ইউ মিস দ্য ট্রেন আই অ্যাম অন, ইউ উইল নো দ্যাট আই অ্যাম গন! ইউ ক্যান হিয়ার দ্য হুইসেল ব্লো এ হান্ড্রেড মাইলস…’