লক্ষ্য নাবালিকা অন্তসত্ত্বার সংখ্যাহ্রাস, নবদম্পতিদের পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কাউন্সিলিং শুরু রাজ্যে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নাবালিকা অন্তসত্ত্বার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নদীয়া জেলায়। স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি একশো জন প্রসূতির মধ্যে ২০ শতাংশ মায়ের বয়স আঠারো বছরের কম। সেই কারণেই এক নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিমাসের প্রথম ও তৃতীয় শুক্রবার নদীয়া জেলায় নব দম্পতিদের পরিবার পরিকল্পনার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হচ্ছে। আশাকর্মী ও এএমএম কর্মীরা এই কাজ করছেন।
এহেন কর্মসূচির লক্ষ্য নাবালিকা অন্তসত্ত্বার সংখ্যা কমানো। দম্পতিদের পাশাপাশি তাদের বাড়ির লোককেও পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল করা হচ্ছে। চাপড়া, কালীগঞ্জ, করিমপুর-১, করিমপুর-২, কৃষ্ণনগর-২, নবদ্বীপ, নাকাশিপাড়া, তেহট্ট-২; সব মিলিয়ে আটটি ব্লককে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কালীগঞ্জ ব্লক ও করিমপুর-২ ব্লকে নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, মোট প্রসূতির ২৭ শতাংশই নাবালিকা! এছাড়াও করিমপুর-১ ব্লকে ২৫ শতাংশ, নাকাশিপাড়া ব্লকের ২৬ শতাংশ প্রসূতিই নাবালিকা। নাবালিকাদের অন্তসত্ত্বা হওয়ার প্রবণতা কমাতেই প্রতিমাসের প্রথম ও তৃতীয় শুক্রবার নবদম্পতিদের কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, আঠারো বছরের আগে গর্ভধারণ করা মা ও বাচ্চা উভয়ের পক্ষেই বিপজ্জনক।
সন্তানধারণের ক্ষেত্রে দম্পতিদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা অত্যন্ত জরুরি। তারই পাঠ দিচ্ছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
নাবালিকাদের অন্তসত্ত্বা হওয়ার প্রবণতার পিছনে অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। স্কুল শেষ হওয়ার আগেই সংসার জীবন শুরু হয়ে যাচ্ছে নাবালিকাদের। গ্রামীণ এলাকার মানুষের আর্থিক অসহায়তা এমন সমস্যার কারণ। নদীয়া জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও বাল্যবিবাহ হয়। নাবালিকা বিয়ে আটকাতে প্রতি পঞ্চায়েতে বিশেষ কমিটি তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। গ্রাম সংসদ, গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক স্তরে কমিটি রয়েছে। ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, স্কুল শিক্ষকদের নিয়ে চাইল্ড প্রোটেকশন কমিটি তৈরি হয়েছে। নাবালিকা বিয়ের খবর পেয়ে প্রশাসন যাতে দ্রুত পদক্ষেপ করতে পারে, সেই জন্য কমিটিতে স্থানীয় ডেকরেটর, ক্যাটারারদেরও যুক্ত করা হয়েছে।