শেষ পর্যন্ত লোকসভায় পাস হয়ে গেল বিতর্কিত ওয়াকফ বিল, আজ পেশ হবে রাজ্যসভায়

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তুমুল হট্টগোলের মাঝে লোকসভায় পাস বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলা ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন বিতর্কে মহানাটক দেখল সদন। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দিলেন। ব্যবধান ৫৬। মোট ভোট পড়ল ৫২০। আজ বৃহস্পতিবার বিলটি পেশ হবে রাজ্যসভায়।
বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই বুধবার লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিল নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে সরকার পক্ষের সংঘাত ছিল শুরু থেকেই। কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, বাম দলগুলি ছাড়াও বিরোধী শিবিরের প্রায় সব দল সম্মিলিতভাবে এই বিলের বিরোধিতা করছে। এদিন মন্ত্রী কিরেন রিজিজু দাবি করেন, ওয়াকফ বোর্ডে স্বচ্ছতা আনতেই এই বিল। তাঁর আরও দাবি, সরকার কোনও ধর্মীয় সংগঠন বা তাদের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করছে না। ওয়াকফ বোর্ডের সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয় এটি।
ওয়াকফ বিল পেশের পর স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা এই বিল নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। সংসদ উত্তাল হয়ে ওঠে বিলের বৈধতার ইস্যু নিয়ে। শেষমেশ বুধবার গভীর রাতে তা পাশ হয়ে যায়। বর্তমান ওয়াকফ বিলের ৪০ নম্বর ধারা আইন অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডের দখল করা সম্পত্তি বা জমিতে কোনরকম সরকারি পর্যালোচনা করা যায় না। পর্যালোচনা ছাড়াই ওয়াকফ বোর্ড জমি দখল করতে পারে। কোনও সম্পত্তি নিয়ে ব্যক্তিগত মালিকানা এবং ওয়াকফ বোর্ডের আইনি বিবাদ চললেও তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার। সরকার এই আইনেই মূলত ওয়াকফ অধিকার খর্ব করতে চাইছে।
নতুন সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হবে জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিকের হাতে। এদিকে আপত্তি উঠেছে নতুন বিলে ওয়াকফ বোর্ডে দুই অ-মুসলিম সদস্যের অন্তর্ভুক্তির বন্দোবস্ত নিয়েও। এ ছাড়া রয়েছে, একটি কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ওয়াকফ সম্পত্তির নথিভুক্তিকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব। পুরনো আইন অনুযায়ী কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি ঘোষণা করলে, চিরদিনের জন্য সেটি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবেই থেকে যেত। নতুন বিল পাশ হলে এবার সেটাকেও চ্যালেঞ্জ করা যাবে।