সাব-নেপচুন গ্রহের রহস্য ভেদ করে বাঙালি বিজ্ঞানী সাগ্নিক মুখোপাধ্যায়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রবাসী বাঙালি বিজ্ঞানী সাগ্নিক মুখোপাধ্যায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন। সাগ্নিক গবেষণা করছেন সৌরজগতের বাইরে থাকা এমন এক ধরনের গ্রহদের নিয়ে, যেগুলি পৃথিবী ও নেপচুনের মাঝামাঝি আকৃতির—যাদের সাব-নেপচুন বলা হয়। সাব-নেপচুন গ্রহের ব্যাসার্ধ ১.৫ থেকে ৪ গুণ পর্যন্ত বড় হয় পৃথিবীর তুলনায়। আশ্চর্যের বিষয়, এই ধরনের গ্রহ আমাদের সৌরজগতে নেই। কিন্তু আকাশগঙ্গা ছায়াপথে এগুলিই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় পাওয়া যায়। সাগ্নিকের কথায়, ‘আমাদের সৌরজগতের মাত্র আটটি গ্রহের প্রত্যেকটিই ইউনিক। এদের কোনও জুড়ি নেই। কিন্তু এখন আমাদের কাছে ৫,০০০-এর বেশি এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরজগতের বাইরের গ্রহ)-এর তথ্য রয়েছে, যেগুলি বিশ্লেষণ করে গ্রহ গঠনের প্রক্রিয়া অনেক বেশি গভীরভাবে বুঝতে পারি।’
সাগ্নিক ইউসি সান্তাক্রুজের অ্যাস্ট্রোনমি বিভাগের পিএইচডি প্রার্থী। খুব শীঘ্রই সেই ডিগ্রি হাতেও চলে আসবে তাঁর। ৫১ পেগাসি বি ফেলোশিপ নামের এই অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কারটি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে হেইসিং-সিমন্স ফাউন্ডেশন। মৌলিক মহাকাশবিজ্ঞান চর্চায় অগ্রণী তরুণ বিজ্ঞানীদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যাতে পুরস্কারের অর্থ দিয়ে গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা। বিশ্বজুড়ে তরুণ গ্রহবিজ্ঞানের গবেষকদের মধ্য থেকে এবার আটজনকে ওই পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানী সাগ্নিকও।
সাগ্নিকের গবেষণা কেন গুরুত্বপূর্ণ, সেই কথাও জানানো হয়েছে হেইসিং-সিমন্স ফাউন্ডেশনের ২৭ মার্চের ঘোষণায়। তারা জানিয়েছে, ‘সাগ্নিকের গবেষণা খুবই সময়োপযোগী। কারণ, বর্তমানে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের বহু শত ঘণ্টার তথ্য বিশ্লেষণ মূলত সাব-নেপচুন গ্রহগুলির দিকেই কেন্দ্রীভূত। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের অতিবৃহৎ টেলিস্কোপগুলিও চালু হচ্ছে—যা এই গবেষণার পরিসর আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’ ফাউন্ডেশনের মতে, ‘সাগ্নিকের তৈরি তাত্ত্বিক মডেল সাব-নেপচুন গ্রহগুলি সম্পর্কে এখনও যে ধোঁয়াশা রয়েছে, তা কাটিয়ে দিতে পারবে। ওই মডেল সাব-নেপচুন গ্রহগুলির গঠন উপাদান ও উৎপত্তির কাহিনী উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।’
এ বছর সেপ্টেম্বরে সাগ্নিকের ফেলোশিপ শুরু হচ্ছে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে তিনি তাঁর বহুমাত্রিক মডেল তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। নতুন প্রজন্মের বৃহৎ টেলিস্কোপ এবং জেডব্লিউএসটি’র তথ্যাবলি বিশ্লেষণ তাঁর এই গবেষণার ভিত্তিকে আরও মজবুত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।