রামনবমীর মিছিলে বাংলা জুড়ে সম্প্রীতির ছবি এখন গোটা দেশে ‘মডেল’

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রামনবমীতে রাজ্যের জেলায় জেলায় অস্ত্র মিছিল যেমন দেখা গেল, তেমনই ধরা পড়ল সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের ছবিও। একদিকে – মালদা থেকে বীরভূম – রাজ্যের নানা প্রান্তে রামনবমীর মিছিলে পুষ্পবৃষ্টি এবং তাতে অংশগ্রহণকারীদের জল ও মিষ্টি বিতরণ করলেন সংখ্যালঘু বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা, অন্যদিকে – কলকাতায় আয়োজিত একটি শোভাযাত্রায় সংখ্যাগুরুদের সঙ্গেই পা মেলালেন সংখ্যালঘুরাও। আপাদমস্তক গোলাপী পোশাক পরে সেই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষকে। তিনি বললেন – সম্প্রীতির এই ছবিই আসলে ‘বেঙ্গল মডেল’।
মিছিলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনকেও দেখা যায়। তিনি বার বার মনে করিয়ে দেন, ইদে যেমন হিন্দুরা সিমুই খেয়েছেন, নিমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন, আনন্দ করেছেন, আজ তেমনই মুসলিম ভাই-বোনেরাও উৎসব উদযাপন করছেন। এটা মিলন উৎসব, সম্প্রীতির উৎসব।
গরমকে পরোয়া না করেই রবিবার সকাল থেকেই বাঁকুড়া জেলায় বের হয় রামনবমীর মিছিল। এই উৎসবে সামিল হয়ে যাতে হিন্দু ভাইদের কাউকে কোনও কষ্ট না পেতে হয়, তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিলেন বাঁকুড়ার চার্চ মোড় এলাকার বাসিন্দা মুসলিম ভাই-বোনেরা। গরমের মোকাবিলায় পথচলতি মানুষ হাতে তুলে নিচ্ছেন ডাব এবং পানীয় জল। এই গরমে এক ফোঁটা জল শরীরের সবথেকে বড় শান্তি। সেই শান্তির ফোঁটাতেই এদিন ধরা পড়ল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশেষ ছবি। প্রখর রোদের মাঝেই জয় শ্রী স্লোগানে মুখরিত এলাকা। রোদে গলা শুকিয়ে জলের খোঁজে থাকা হিন্দু ভাইদের সামনে জলের গ্লাস তুলে ধরলেন সেখানকার মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা।
সম্প্রীতির ছবি দেখা গেল বীরভূমের রামপুরহাটে। রামনবমীর শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া সকলকেই জল-মিষ্টি দিলেন বগটুইবাসী আকসার, রিয়াজুলেরা। দু’জনেই বলেন, ‘‘সম্প্রীতির বার্তা দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’’ ওই কর্মসূচিতে যোগ দেন রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। একই ছবি দেখা গেল মালদহের ইংরেজ বাজারেও। সেখানে রামনবমীর শোভাযাত্রায় পুষ্পবৃষ্টি করলেন রহিম শেখেরা। আলিঙ্গন করে মিষ্টিমুখও করানো হল মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের। রহিম বলেন, ‘‘খুব সুন্দর অনুভূতি, সম্প্রীতির অনুভূতি। এটাই ভারতবর্ষ। আমরা সকলে এক। হিন্দু-মুসলিম ভাই-ভাই। আমরা সকলে সম্প্রীতির বার্তা দিতে চাই।’’