বলেছিলেন দুর্গাষ্টমীতে গোরুর মাংস রান্না করতে চান, সেই দেবলীনা এবার সঙ্ঘের মঞ্চে!

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার জাতীয় গ্রন্থাগারে আরএসএসের সাংস্কৃতিক শাখা ‘সংস্কার ভারতীর’ নববর্ষ আবাহন কর্মসূচির আয়োজন করে। আর সেখানেই অতিথি হিসেবে দেখা গেল অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তকে। তবে দেখা গেল, দেবলীনার মঞ্চে উত্তরীয় গলায় দাঁড়িয়ে থাকা ছবিটি শেয়ার করে, প্রতিবাদে মজেছে একটা অংশ। বলা বাহুল্য, তাঁরা আরএসএসের সমার্থক ও কর্মী।
কেন এই বিক্ষোভ? আসলে ২০২১ সালে টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানে এক বক্ত মহাষ্টমীর দিন গোরুর মাংস খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। আর সেই ইচ্ছেয় সমর্থন জানিয়ে দেবলীনা বলেছিলেন যে, তিনি নিজে নিরামিষাশী হলেও ওই বক্তা চাইলে তিনি তাঁকে মহাষ্টমীর দিন গোমাংস রেঁধে দিতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই সেই সময় রীতিমতো সমালোচনার মুখে পড়েন অভিনেত্রী। এখন আরএসএস সমর্থকদের প্রশ্ন, দেবলীনাকে কেন ডাকা হল সঙ্ঘ পরিবারের অনুষ্ঠানে?
দেবলীনা বলছেন, ‘‘আরএসএস সম্পর্কে আমার কোনও ছুতমার্গ নেই। কোনও সংগঠন বা কোনও ধর্ম গোটাটাই খারাপ হয় না। ব্যক্তি খারাপ হন, ব্যক্তি ভাল হন।’’ বস্তুত, ২০২১ সালের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে দেবলীনার তেমন অনুতাপও নেই। তবে দেবলীনার ছুতমার্গ না থাকলেও ওই মন্তব্য নিয়ে আরএসএসের ছুতমার্গ এখনও রয়েছে। দেবলীনা বলছেন, ‘‘আমার অবস্থান বদলের প্রয়োজন নেই। আমি বলতে চেয়েছিলাম যে, আমি কারও খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করাকে সমর্থন করি না। কিন্তু আমি নিজে কোনও মাংসই খাই না। মাছও খাই না। আমি সম্পূর্ণ নিরামিষাশী।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘ঈশ্বর মৎস্যরূপেও এসেছিলেন। সুতরাং প্রকৃত হিন্দুর মাছও খাওয়ার কথা নয়। আমি খাই না।’’ উল্টে দেবলীনার প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা আমার ওই একটা মন্তব্যের সমালোচনা করছেন, তাঁরা কি আমার মতো নিরামিষাশী? না কি তাঁরা মাছ-মাংস খান? যদি তাঁদের মাছ-মাংস খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে, তা হলে কি আমাকে নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলার জায়গায় রয়েছেন?’’
দেবলীনার চেয়ে বেশি প্রশ্নের মুখে অবশ্য পড়তে হচ্ছে ওই সংগঠনকে। দেবলীনাকে কে আমন্ত্রণ জানালেন, কেন জানালেন, সঙ্ঘ পরিবারের অন্দরে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে তা নিয়েই। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা দক্ষিণবঙ্গের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যা নীলাঞ্জনা বলছেন, ‘‘দেবলীনাকে আমরা আমন্ত্রণ করিনি। সম্ভবত আরএসএসের সম্পর্ক বিভাগের তরফে তাঁকে কেউ আমন্ত্রণ করেছিলেন। কারণ সম্পর্ক বিভাগ সারা বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতী মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। তার অঙ্গ হিসেবে কেউ দেবলীনাকে আমন্ত্রণ করে থাকতে পারেন।’’ নীলাঞ্জনার কথায়, ‘‘আমরা যখন দেখলাম একজন অভিনেত্রী তথা খ্যাতনামী সভাগৃহে এসেছেন, তখন আমরা তাঁকে তাঁর যথাযোগ্য সম্মান দেওয়ার জন্য মঞ্চে ডেকে উত্তরীয় পরিয়ে দিয়েছি। তার পরে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছেন।’’