চাকরিহারা’দের ‘পাশে দাঁড়াতে’ কার্যত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে বিরোধী দলগুলির মধ্যে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কোন দল কত ভাবে ‘চাকরিহারা’দের পাশে দাঁড়াতে পারে, কার্যত সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, এসএসসি দপ্তরের বাইরে একদল চাকরিহারা শিক্ষক অনশনে বসেছেন। সেখানে দৌড়েছেন বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। আবার অন্য একদল চাকরিহারা ধর্মতলায় মিছিল করলেন। সেখানে আর জি কর আন্দোলনের সময় পথে নামা বাম-অতিবাম মনোভাবাপন্ন লোকজনকে দেখা গেল। এই প্রবল দড়ি টানাটানির মধ্যে চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীরা কোন পথে? এই পর্বেই একদল চাকরিহারা শিক্ষক আগামী ১৬ এপ্রিল দিল্লিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যন্তরমন্তরে অবস্থানে বসবেন বলে ঠিক করছেন তাঁরা।
চাকরিহারা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার কংগ্রেস, বামফ্রন্ট নিজেদের ব্যানারে পৃথক মিছিলের ডাক দিয়েছিল। এদিন শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলকারীদের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন আর জি কর আন্দোলনের চিকিত্সকরা। এর পাশাপাশি অভিনেতা বাদশা মৈত্র, চন্দন সেনের মতো বাম মনোভাবাপন্নদেরও দেখা যায়। এসইউসি দলের একাধিক কর্মী-সমর্থকদেরও দেখা যায়। তাহলে কি রাম-বাম একযোগে নেমে পড়েছেন, ২০২৬-এর বিধানসভার ‘ডিভিডেন্ট’ তোলার জন্য? প্রশ্ন থাকছেই।
মিছিলে থাকা চাকরিহারা শিক্ষক ইল্লাজুল রহমান বলেন, ‘আমরা এই মিছিলে সকল নাগরিকদের যোগদান করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমাদের নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা তো হচ্ছেই। আমরা তো সেই কারণেই সর্বদল বৈঠক চাইছি। আমরা কখনওই সরকারের বিরুদ্ধে নই। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতেও আমরা গিয়েছিলাম। ঝান্ডা রেখে যে কেউ আসতে পারেন।’ এদিকে এসএসসি অফিসের বাইরে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন বিজেপির রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। সেখানে গিয়ে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি বিরোধী বলেই, যা বলব অন্যায়! এটা তো হতে পারে না। যাঁরা সরকারে আছেন, তাঁকে কেন সমাধানের কথা বলছেন না?’ এসএসসি অফিসের সামনে বসে থাকা শিক্ষক সুমন বিশ্বাস বলছেন, ‘আমি বলেছিলাম, যে কেউ আসতে পারেন। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়কে আসতে বলা হয়েছিল। অনেকের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। কিন্তু আমরা তার আঁচ লাগতে দেব না। কোনও দলের পরিচালনায় আমাদের এই কর্মসূচি হচ্ছে না।’ দু’জায়গায় দু’টি আন্দোলন হল। তাহলে কি চাকরিহারারাই দ্বিধাবিভক্ত? সুমন আরও বলছেন, ‘এটা একটা অপ্রিয় সত্যি কথা। আর জি কর আন্দোলন ধূলিস্যাত্ হয়েছিল কিছু অতি বাম ও রাজনৈতিক আঁতাতের কারণে। আমাদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা প্রথম দিন থেকেই। কিন্তু আমরা সচেতন।