বিল অনন্তকাল ধরে আটকে রাখা যাবে না, রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিল শীর্ষ আদালত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে বহু বিল আটকে পড়ে থাকে। বিভিন্ন রাজ্যের আইনসভায় পাশ হওয়া এমন অজস্র বিল পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিলকে ঘিরে অবিজেপি রাজ্যে নির্বাচিত সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাত বার বার চোখে পড়ছে। তবে এবার থেকে আর আইনসভায় পাশ হওয়া বিল অনন্তকাল ধরে আটকে রাখতে পারবেন না রাষ্ট্রপতি। তিন মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে হবে তাঁকে। যদি বাড়তি সময় প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে কারণ জানাতে বাধ্য থাকবেন রাষ্ট্রপতি। ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কোনও বিলে মতামত জানানোর ক্ষেত্রে এই প্রথম রাষ্ট্রপতির জন্যও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হল। বিধানসভায় পাশ হওয়া পরেও তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি ১০টি বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার অছিলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ডিএমকে সরকার। রাজ্যপালের এহেন কাজকে অসাংবিধানিক বলে তোপ দেগেছে শীর্ষ আদালত। মামলার বিস্তারিত রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে। বিল নিয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণে রাষ্ট্রপতির জন্যও তিন মাসের সময় কার্যত নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে রায়ে।
সংবিধানের ২০১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপাল নিজে কোনও বিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিয়ে তা রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারেন। সিদ্ধান্তগ্রহণের জন্য সংবিধানে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তামিলনাড়ু সরকারের দায়ের করা মামলার রায়ে সময়সীমা বেঁধে দেন বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চ। রায়ে বলা হয়েছে, ২০১ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতির পালনীয় কর্তব্য বিচার বিভাগের পুনর্মূল্যায়ন সাপেক্ষে সংশোধনযোগ্য। রাষ্ট্রপতির কোনও পকেট ভেটো নেই। হয় তিনি বিলে সম্মতি জানাবেন, নয় খারিজ করবেন। সময়সীমার মধ্যেই তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নজিরবিহীনভাবে রাষ্ট্রপতির জন্য তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিল শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে শনিবার রাজ্যপালের স্বাক্ষর ছাড়াই ১০টি বিল আইনে পরিণত হয়েছে তামিলনাড়ুতে। বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ডিএমকে সরকার। উল্লেখ্য, দেশে এই প্রথম আইনসভায় পাশ হওয়া কোনও বিল রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়াই আইনে পরিণত হল।