কেউ কেউ প্ররোচনা দেবে, তার ফাঁদে পা দেবেন না, কালীঘাটের স্কাইওয়াক উদ্বোধনে এসে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সোমবার চৈত্র সংক্রান্তিতে কালীঘাটের স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই স্কাইওয়াক তৈরির জন্য হকারদের রুজি রোজগার বন্ধ যেতে পারত বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল হকারদের একাংশের মনে। কিন্তু ‘মানবিক’ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই সংকট কেটে যায়। হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়। একবছরের জন্য হাজরা পার্কে হকার্স কর্নার বানিয়ে দেওয়া হয়।
এদিন কালীঘাটের স্কাইওয়াকের পাশাপাশি হকার্স কর্নারের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে মমতা জানান, দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকের বৈঠকের সময়ই কালীঘাটে স্কাইওয়াক তৈরির কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরে বেশ কিছুটা জায়গা থাকলেও কালীঘাট বড্ড ঘিঞ্জি। ফলে স্কাইওয়াক তৈরির জন্য জায়গা বের করা কঠিন কাজ ছিল। আর কালীঘাটের উন্নয়নের স্বার্থে যখন এই স্কাইওয়াকের পরিকল্পনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী সেইসময় হকারদের একাংশের মনে আশঙ্কা তৈরি হয় যে তাঁদের পেটে টান পড়তে পারে।
কদিন আগে রেড রোডে ইদের নমাজে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর সেই ছবি নিয়ে সমাজমাধ্যমে কী ধরনের সমালোচনা হয়েছিল, তা অনেকেরই জানা। সোমবার কালীঘাটে স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করতে গিয়ে রেড রোডের অনুষ্ঠানের কথা সরাসরি মুখে আনলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে প্রশ্ন তুললেন, এত অসহিষ্ণুতা কেন? তাঁর কথায়, “আমি অন্য কোনও প্রোগ্রামে গেলেই আমার বিরুদ্ধে লেখা হয়। আমার টাইটেলও বদলে দেওয়া হয়। অথচ আমি বরাবরই বলি ধর্ম যার যার, উৎসব সবার”।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম মানে তো শ্রদ্ধা, ধর্ম মানে ভালবাসা, ধর্ম মানে শান্তি, ধর্ম মানে স্বস্তি, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি”। তাঁর কথায়, “আমরা জন্মের সময়ে একা আসি। একাই চলে যাই। তাই কীসের ধর্ম, কীসের দাঙ্গা। মানুষকে ভালবাসার থেকে বড় ধর্ম আর কিছু হতে পারে না”।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি আগেও বলেছি, কারও উপর যদি আঘাত আসে তা সে সে বঞ্চিত হোক, নির্যাতিত হোক, পিছিয়ে পড়া হোক—আমরা বরদাস্ত করব না। শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অধিকার সবার রয়েছে। অবশ্যই পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কেউ কেউ প্ররোচনা দেবে, তার ফাঁদে পা দেবেন না। তাহলে যারা প্ররোচনা দিচ্ছে তাদেরই জয় হবে”। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। তাই বাংলার ঘরে ঘরে বিজয় পতাকা উড়িয়ে দাও সবার উপরে। এই মাটিটাকে ভালবাসো”।