মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অক্ষয় তৃতীয়ায় দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বুধবার নবান্নে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের প্রস্তুতি বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে একথা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, “ঠিক পুরীর মতোই সমুদ্রের পাশে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন। মন্দির ঘিরে রুজি রোজগার বাড়বে। দিঘাই এখন নতুন কর্মক্ষেত্র, ধর্মক্ষেত্র। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন সংযোজন।” অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যতিথিতে মন্দির উদ্বোধন। তবে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। আগামী ২৮ এপ্রিল দিঘা আমন্ত্রিতদের পৌঁছনোর আর্জি জানান মমতা। পরদিন যজ্ঞ। ৩০ এপ্রিল প্রাণপ্রতিষ্ঠা এবং মন্দিরের দ্বারোদঘাটন। তারপর ইসকনের হাতে মন্দিরের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
গত বছর মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল। সেকথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মহাকুম্ভে অনেক লোক মারা গেছে। তাই ট্রাফিক সিস্টেম ভাল করে কোঅর্ডিনেট করতে হবে। এজন্য প্রতিটি জেলায় নোডাল অফিসার রাখতে হবে। দেখতে হবে মানুষের সেফটি সিকিউরিটির বিষয়ে যেন কোনও খামতি না থাকে।”
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান গঙ্গাসাগর মেলার ধাঁচে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে ভক্তদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। যাঁরা গঙ্গাসাগর মেলার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে নিরাপত্তা দেখভালের জন্য। প্রয়োজনে বেসরকারি সিকিউরিটি সংস্থার সহযোগিতাও নেওয়া হবে।
লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমাগম সত্ত্বেও গঙ্গাসাগর মেলাকে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে ইতিমধ্যে নজির গড়েছে রাজ্য। তবে এ নিয়ে প্রশাসনের অভ্যন্তরে যেন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস তৈরি না হয়, সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, “মনে রাখবেন গঙ্গাসাগর মেলাটা কিন্তু শীতকালে হয়। আর দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হচ্ছে কালবৈশাখীর সময়। তাই কালবৈশাখীর ঝড়ের কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মন্দিরের জায়গা অনেকটা বড়। ভোগ ঘর থেকে সব কিছু খুব ভাল করে তৈরি হয়েছে। তবে রাস্তাটা বড় নয়। ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে ডেকে আনলে তো হবে না, তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই না, প্রচুর মানুষকে ডেকে এনে একটা হচপচ পরিস্থিতি তৈরি হোক। তাই সমস্ত মন্ত্রীকেও নিয়ে যাচ্ছি না। যতটা সম্ভব কম ভিআইপি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
এদিকে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে বাঙালি আবেগও রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে উদ্বোধনের দিন যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম না হয় তাই রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে এলইডির মাধ্যমে উদ্বোধনের সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করছে রাজ্য। এছাড়াও দিঘার তিনটি এলাকায় ভক্তদের জন্য রাখা হবে তিনটি বড় হ্যাঙ্গার। যার সাহায্য সেখান থেকে হাজার হাজার মানুষ মন্দিরের উদ্বোধন দেখতে পাবেন। উদ্দেশ্য একটাই, উদ্বোধনের দিন মন্দির চত্বরে বাড়তি ভিড় এড়ানো।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩০ এপ্রিল বেলা ১১টায় দিঘার মন্দিরে জগন্নাথ দেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। পুরো কাজটি করবেন পুরীর সেবাইত রাজেশ দ্বৈতপতি ও তাঁর টিম। এরপরই মন্দিরের দায়িত্ব ইসকনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মন্দিরের জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডে চাইলে মহারাজরাও থাকতে পারেন বলে এদিন ভারত সেবাশ্রম সংঘের কাছেও আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এদিন স্থানীয়দের কাছেও সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী