কেমন হল CPI(M)-র চার গণসংগঠনের ডাকা শ্রমজীবীদের ব্রিগেড?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বঙ্গ রাজনীতিতে ব্রিগেড আর বাম, যেন রাজযোটক জুটি। বৈশাখের তপ্ত দুপুরে সিপিআইএমের কৃষক, শ্রমিক, খেতমজুর এবং বস্তি সংগঠন ব্রিগেড ডেকেছিল। লাল নিশানে ভর্তি হয়েছিল ঐতিহাসিক ব্রিগেডের মাঠ। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে ব্রিগেড ভর্তি হলেও বামের ভোট বাক্সে কোনও প্রতিফলন হয় না তার! এ নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল, বিজেপি। কিন্তু কেমন হল এবারের ব্রিগেড?
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বক্তা হিসাবে না থাকায় এমনিতেই দলের তরুণ-যুবরা ক্ষুব্ধ বলেই সূত্রের খবর। কিছুটা ভাটার টান ছিলই। অন্যদিকে, লাগাতার ভোটে হার ও এপ্রিলের গরম জমায়েতে প্রভাব ফেলেছে। বিগত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সিপিআইএমের যুব সংগঠনের ডাকা ব্রিগেডের তুলনায় এবার ভিড় কমেছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
২০২১ সালে নির্বাচনের প্রাক্কালে ব্রিগেড করেছিল বামেরা, তাতে কংগ্রেস ও আইএসএফ ছিল। তিল ধারণের জায়গা না থাকা ব্রিগেডের পর বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৫.৫০% ভোট পেয়েছিল বামেরা। ২০২৪ সালে ডিওয়াইএফআই-র ব্রিগেড ছিল সাম্প্রতিককালের অন্যতম সফল ব্রিগেড। বিপুল মানুষ এসেছিলেন কিন্তু লোকসভা ভোটে দেখা যায় ৬.৩৫% ভোট পায় বামেরা। দুই ভোটের আসন সংখ্যা শূন্য। দিকে দিকে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় বাম প্রার্থীদের। এবার ভিড় আরও কম, তাহলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বামেদের প্রাপ্ত ভোটের হার? প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
সমাজ মাধ্যমে দেবাংশু লেখেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই চাইনা সিপিএম তথা বামফ্রন্ট বাংলার রাজনীতির ম্যাপ থেকে পুরোপুরি মুছে যাক। কিন্তু, তাদের নেতাদের অহংকার, শারীরিক ভাষায় অত্যধিক ঔদ্ধত্য এবং পূর্বের সমস্ত ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার বদলে আজও সেগুলিকে সঠিক প্রমাণ করে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টাই এই রাজনৈতিক দলটার সর্বনাশের মূলে বিরাজমান।”
তিনি আরও লিখছেন, “আরেকটা দৃশ্য আমার অদ্ভুত লাগলো! মঞ্চে যখন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বক্তৃতা দিচ্ছেন, তখন তাদেরই দলের কিছু যুব নেতৃত্ব নীচে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে হাসি-ঠাট্টা করছেন। দলের নতুন প্রজন্ম যদি নেতৃত্বের বার্তার প্রতি আগ্রহী না হয়, তাহলে সাধারণ জনগণ আগ্রহী হবেন তারা ভাবছেন কী করে?
আবারও বলছি, এই পোস্ট তৃণমূল কংগ্রেসের কোন কর্মী হিসেবে নয়। আমি কী বলতে চাইছি আমার বিশ্বাস সেটা বাম নেতারাও বুঝছেন। তারা স্টেজের উপর থেকে গোটা ভিড়টা দেখেছেন.. এবারের ভিড়ে সেই উৎসাহটা ছিল? বাম ব্রিগেডের পরিচিত সেই উদ্দীপনা লক্ষ্য করেছেন? স্টেজের উপরের নেতা এবং স্টেজের নীচের নেতা কিংবা মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কর্মীগণ, প্রত্যেকের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে যেন একটা দায়সারা ভাব; যেন অবশিষ্টটুকু বিজেপিতে বিক্রি করে দিয়ে আসার পর একটা নিয়মরক্ষার বিজ্ঞাপন!”
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, বামেদের ব্রিগেড জমায়েতের ৭০% বিজেপির ভোটার।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট, দেখা যাক আদৌ বামেরা নিজেদের ক্ষয় রুখতে পারে নাকি বাংলার মাটিতে রাজনৈতিকভাবে আরও গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে লাল পার্টি।