পহেলগাঁওয়ে গণহত্যাকারী জঙ্গিরা নিরাপদে পাকিস্তানে পালাতে পারেনি, পীর পঞ্জাল রেঞ্জের জঙ্গলে আত্মগোপন করে থাকার সম্ভাবনা, মনে করছে গোয়েন্দারা

বৈসরণ উপত্যকায় এর আগে কতবার এসেছিল পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো জঙ্গিরা? সেই তথ্য জানতে চাইছে গোয়েন্দারা। স্থানীয়দের জেরা করা চলছে। ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পহেলগাঁওয়ে গণহত্যাকারী জঙ্গিরা নিরাপদে পাকিস্তানে পালাতে পারেনি। পীর পঞ্জাল রেঞ্জের জঙ্গলে তাদের আত্মগোপনের সম্ভাবনা বেশি। সকলেই একসঙ্গে? নাকি কয়েকজন কোকেরনাগ অথবা কিস্তওয়ারের দিকেও গিয়েছে? খোঁজ চলছে। সমস্ত সীমান্ত ‘সিল’ করা। জঙ্গল থেকে বেরনোর উপায় নেই।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিসের প্রাথমিক স্টেটাস রিপোর্টে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা লস্কর-ই-তোইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্টের সদস্য। যদিও তাদের প্রশিক্ষণ হয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে। আর তার দায়িত্বে ছিল মাসুদ আজহারের জয়েশ-ই-মহম্মদ। অর্থাৎ, জয়েশ এবং লস্করের যৌথ অপারেশন এই বৈসরণ গণহত্যা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, উপস্থিত জঙ্গিদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন উর্দু ভাষায় কথা বলছিল।
মঙ্গলবার ঘটনার আগে এবং পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল করাচি এবং মুজফ্ফরাবাদ থেকে। স্যাটেলাইট ফোন কমিউনিকেশন ইন্টারসেপ্ট করা হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে ভয়েস স্যাম্পল। প্রত্যেকের শরীরে ছিল বডি ক্যামেরা। অর্থাৎ পর্যটক হত্যার ছবি-ভিডিও পরে ‘হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে সফল জেহাদ’ হিসেবে প্রচার করা হবে। জঙ্গিদের যারা সহায়তা করেছিল, তাদের একজনের নাম আদিল হুসেন। সে অনন্তনাগ জেলার বিজবেহরার বাসিন্দা। আর অন্যজন আসিফ শেখ, ত্রালের বাসিন্দা। সে সম্ভবত আবার ত্রালের দিকে চলে গিয়েছে। তবে সেখানে পৌঁছয়নি। মঙ্গলবারের হামলার আগে এই দু’জনকে অনন্তনাগের আদালত চত্বরে দেখা গিয়েছিল।
২০১৮ সালে আদিল পাকিস্তানে গিয়েছিল। আসিফ পাকিস্তানে কবে গিয়েছিল, সেটা জানা যায়নি। যে বুলেট পহেলগাঁওতে পাওয়া গিয়েছে, তার কিয়দংশ দেখে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের বিবরণ শুনে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, শুধু কার্বাইন, এ কে ৪৭ নয়, এম ফোর রাইফেলও ব্যবহার করা হতে থাকতে পারে। এই এম ফোর রাইফেল ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ব্যবহার করেছিল মার্কিন বাহিনী, যার বড় অংশ তালিবান দখল অথবা চুরি করেছে। তবে কি তালিবানের হাত ঘুরে জয়েশের কাছে এসেছে ওই আগ্নেয়াস্ত্র?