ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় বিস্তীর্ণ জঙ্গলকে অভয়ারণ্যে পরিণত করার ভাবনা, শুরু সমীক্ষা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় বিস্তীর্ণ জঙ্গলকে এবার অভয়ারণ্যে পরিণত করার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য। বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা জানান, বেলপাহাড়ী ও পার্শ্ববর্তী জেলার জঙ্গলে বাঘ, হরিণ, ভাল্লুক ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দেখা মিলছে। এইসব জঙ্গলে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গল এলাকাকে অভয়ারণ্য করা যায় কি-না তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। সমীক্ষার রিপোর্টের পর কার্যকরী পদক্ষেপ করা হবে। ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের তরফে ইতিমধ্যেই জঙ্গল এলাকায় বন্যপ্রাণীর সংখ্যা জানতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে।
জঙ্গল এলাকায় ঘন ঘন বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে। ভুলাভেদা রেঞ্জের জোড়ামের জঙ্গলে দু’ দিন আগেই ভাল্লুকের দেখা পাওয়া গিয়েছে। মনিয়ারডি এলাকায় জঙ্গলে একটি চিতল হরিণ ঢুকে পড়েছিল। রাজ্যের তিন জেলা ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জঙ্গল ফের বন্যপ্রাণীদের বিচরণস্থল হয়ে উঠেছে। বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঝাড়গ্রামের অরণ্যে দেড়শো বছর আগেও বাঘ, চিতাবাঘ, হায়না, ভাল্লুক, হরিণ, বুনো মোষের দেখা মিলত। ব্রিটিশ আমলে নির্বিচারে বন্যপ্রাণী নিধনের ফলে ঝাড়গ্রামের জঙ্গল থেকে বাঘ, চিতাবাঘ, ভাল্লুক হারিয়ে যায়। স্বাধীনতার পর বন্য পশুপাখি মারা নিষিদ্ধ করা হয়। সাত-আটের দশকে চোরা কারবারিরা নির্বিচারে গাছ কাটায় জঙ্গলের ঘনত্ব কমে যায়। বেলপাহাড়ী, বাঁশপাহাড়ী, ঝাড়গ্রাম, লোধাশুলি, মানিকপাড়ার মতো বনাঞ্চলে প্রতি হেক্টর বনভূমিতে শালগাছের গড় সংখ্যাটা কমে ৫০ থেকে ১০০-র মধ্যে দাঁড়ায়।
ঝাড়গ্রাম বনদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ১২টি রেঞ্জে প্রতি হেক্টর বনভূমিতে শাল গাছের সংখ্যা ছিল তিনশোর কাছাকছি। বন্যপ্রাণীদের জঙ্গলে ফেরার প্রাথমিক কারণ এই জঙ্গলের ঘনত্ব বৃদ্ধি। রাজ্য সরকার ২০১৬ সালে জঙ্গল দেখভালের জন্য বন্যপ্রাণ (দক্ষিণ) শাখা গড়ে তোলে। ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ অভয়ারণ্য গড়ে তোলার বিষয়ে তৎপর। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায়র জঙ্গল বন্য পশুপাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠতে পারে। অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা হলে জঙ্গলের পশুপাখিরা বাঁচবে। পর্যটকও বাড়বে। আর্থিক লাভের মুখ দেখবেন তিন জেলার মানুষ।