ইংরেজি ভাষা ঐক্যের মাধ্যম-উন্নয়নের হাতিয়ার, অমিত শাহের মন্তব্যকে কটাক্ষ করলেন TMC সাংসদ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি,৮:০০: দিনকয়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, যারা ইংরেজি বলেন তারা একদিন লজ্জিত হবেন। তারপর থেকেই বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সূত্রপাত।
অমিত শাহের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল সংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। ইংরেজি শুধুমাত্র একটি ভাষা নয়, এটি একটি ঐক্যের মাধ্যম এবং এমন একটি হাতিয়ার, যা লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর কারও কাছে প্রবেশাধিকার, কারও কাছে পরিচিতি, নিজের একটি ব্লগ পোস্টে একথাই বললেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক।
নিজের লেখায় তিনি উল্লেখ করেন, ভারতে ২১টি ভাষা এবং ১৯,৫০০টি উপভাষা রয়েছে, এবং ইংরেজি কোনো ভারতীয়কে, কম ভারতীয় করে তোলে না। বরং, এটি ভারতীয়দের বিশ্বজগতের সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত করে।
তাঁর মতে, ইংরেজিকে অস্বীকার করা মানে সেইসব ভারতবাসীর লড়াই ও আকাঙ্ক্ষাকে অস্বীকার করা, যাদের দীর্ঘকাল ধরে অচ্ছুত করে রাখা হয়েছে।
“যদি এটিকে কেবল ঔপনিবেশিক ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই দেখা হয়, তবে সেটা বিশ্বের বর্তমান অবস্থাকে এবং ভাষাটির ক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করা,” বলেছেন ও’ব্রায়েন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইংরেজি বিষয়ক মন্তব্যকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এত বড় ও বৈচিত্র্যময় দেশে, ইংরেজি শুধুই একটি ভাষা নয়, এটি একটি ঐক্যের মাধ্যম। যাঁরা সমাজের প্রান্তিক স্থানে থেকে জীবন কাটাচ্ছেন, তাঁদের কাছে ইংরেজি একটি হাতিয়ার – যা প্রবেশাধিকার, পরিচিতি এবং উন্নয়নের আশ্বাস দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “ইতিহাস জুড়ে ইংরেজি ছিল একটি কার্যকরী সহযোগী – যা ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, প্রতিষ্ঠান গঠনে এবং ভারতকে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত রাখতে ব্যবহৃত হয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি নতুন বা অভিজাত নয়। এটি সেইসব মানুষের চিন্তাধারার ভিতরে নিহিত, যাঁরা এই দেশ গড়েছেন। ইংরেজি বলার জন্য মানুষকে লজ্জা দেওয়া মানে ইতিহাসকে অস্বীকার করা, অগ্রগতিকে দুর্বল করা এবং বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে দেওয়া,”।
তাঁর সংযোজন, “ভারতের কমসংখ্যক ইংরেজিতে কথা বলার লোক দরকার, এমনটা নয়। বরং দরকার আরও বহুভাষিকতা, আরও প্রবেশাধিকার এবং সেই আত্মবিশ্বাস যাতে আমরা একাধিক ভাষায় নির্ভয়ে ও নির্লজ্জে কথা বলতে পারি।”
মহাত্মা গান্ধী, বি. আর. আম্বেদকর, সি. রাজাগোপালাচারী, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, ড. এস. রাধাকৃষ্ণন, সাবিত্রীবাই ফুলে, অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং ফ্র্যাঙ্ক অ্যান্থনি-র মতো নেতাদের মন্তব্যও উদ্ধৃত করেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি আরও বলেন, হিন্দি কোনও ভারতীয় ভাষার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সকল ভারতীয় ভাষার বন্ধু এবং পাশাপাশি কোন বিদেশি ভাষার বিরোধিতা করারও কোনো প্রয়োজন নেই।