আর নয় ‘Backbenchers’, সবাই সামনে! নতুন আসনবিন্যাসে বদলে যাচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৫৮: স্কুলে বদলে যাচ্ছে শ্রেণিকক্ষের পরিচিত দৃশ্য। ‘ব্যাকবেঞ্চার’ নয়, এবার নতুন আসনবিন্যাসে প্রত্যেক ছাত্রই সামনে বসছে, প্রত্যেক কণ্ঠস্বরই পাবে গুরুত্ব।
শিক্ষকদের মুখে বারবার শোনা যেত “পেছনে যারা আছো, সামনে এসে বসো”, এই ডাক যেন হয়ে উঠেছিল নিয়মিত। কিন্তু সেই ‘পেছনের বেঞ্চ’ এবার হয়তো ইতিহাস হতে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু এবং পঞ্জাবসহ একাধিক রাজ্যে বদলে যাচ্ছে শ্রেণিকক্ষের আসনবিন্যাস। ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে সামনের ও পেছনের বেঞ্চের বিভাজন।
এর পেছনে প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার কোনও গবেষণা নয়, বরং অনুপ্রেরণা এসেছে এক মালয়ালম শিশুতোষ সিনেমা স্থানার্থী শ্রীকুট্টন থেকে। দক্ষিণ কেরলের কোট্টারক্কারার রামবিলাসম ভোকেশনাল স্কুল প্রথম সেই সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথম উদ্যোগ নেয়।
রামবিলাসম স্কুলে প্রথম একটি শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয় ‘ইউ’ বা ‘ভি’ আকৃতির বসার ছক। শ্রেণিকক্ষের চার পাশে বেঞ্চ বসানো হয়। প্রতিটি ছাত্র তখন যেন সামনের সারিতেই বসছে।
কেন Backbenchers-এর প্রচলন?
এই সামনের-পেছনের আসন বিভাজনের শুরু ১৯ শতকের প্রুশিয়ান শিক্ষাব্যবস্থা থেকে, যা পরবর্তীকালে ইউরোপ ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। উপনিবেশিক ভারতে এই পদ্ধতিতে শিক্ষা ছিল বশ্যতা শেখানোর হাতিয়ার।
পশ্চিমবঙ্গে নতুন আসনবিন্যাসের মডেল
মালদা জেলার শতবর্ষপ্রাচীন বার্লো গার্লস হাই স্কুল প্রথম এই মডেল চালু করেছে। সপ্তম শ্রেণির গণিত, ইতিহাস ও কর্মশিক্ষার ক্লাসে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন আসনবিন্যাস প্রয়োগ করা হয়। প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদারের মতে, পেছনে বসে যারা আগে বোর্ড দেখতে পারত না, তারা এখন ক্লাসে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে—প্রশ্ন করছে, মত দিচ্ছে।
অন্যদিকে, মালদার স্কুল ইন্সপেক্টর বানীব্রত দাসও জানিয়েছেন, ‘শ্রীকুট্টন’ ছবির ভাবনা তাঁদের গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। সাধারণ একটি ধারণা থেকেও যে শ্রেণিকক্ষে বড় পরিবর্তন আনা যায়, সেটাই প্রমাণ করছে এই উদ্যোগ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন বসার ছকে তৈরি হতে পারে বড়সড় পরিবর্তনের দিশা। Backbenchers উঠে গেলে সবার অংশগ্রহণ বাড়বে, যা বদলে দিতে পারে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার পরিবেশ ও দৃষ্টিভঙ্গি।