আম জনতার স্বস্তি! ন্যূনতম ব্যালান্স না-রাখলেও জরিমানা নয়? সিদ্ধান্ত বদল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:৫৫: সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স না-রাখলে মোটা টাকা জরিমানা দিতে হয় ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের। ব্যাঙ্কগুলোর ভাল অঙ্কের আয় আসে এই জরিমানা থেকে। এবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অনেকেই জরিমানা কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল। অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও শীঘ্র একই পথে হাঁটতে পারে। এহেন সিদ্ধান্তকে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে কর্মী ও অফিসারদের সংগঠনগুলি।
অর্থমন্ত্রক সংসদে জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স না-থাকায় গ্রাহকদের থেকে ৮,৯৩৩ কোটি টাকা আয় করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। এই তালিকায় স্টেট ব্যাঙ্ক নেই। তারা বহু আগে এই শর্ত থেকে সরে এসেছে। একই পথে হাঁটছে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা, কানাড়া ব্যাঙ্ক, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।
মনে করা হচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি পাবে সাধারণ মানুষ। বহু নিম্নবিত্ত মানুষ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অ্যাকাউন্ট খুলে ন্যূনতম ব্যালান্স বজায় রাখতে পারেন না। তাঁদের টাকা কেটে নেয় ব্যাঙ্ক। অর্থমন্ত্রকই জানিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এই খাতে গ্রাহকদের থেকে ১,১৪২ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ২,৩৩১ কোটি টাকা আদায় হয়। যদিও ২০২৪ -২৫ অর্থবর্ষে জরিমানার অঙ্ক কমে ২,১৭৬ কোটি টাকায় নেমেছে।
ব্যাঙ্ক চায় সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টেই মানুষ বেশি টাকা রাখুন। কারেন্ট ও সেভিংস অ্যাকাউন্টের টাকার ভাগ যত বাড়বে, ব্যাঙ্কের আর্থিক অবস্থা তত চাঙ্গা হবে। সম্প্রতি কারেন্ট ও সেভিংস অ্যাকাউন্টে আমানত কমে যাওয়ায় ব্যাঙ্কগুলি অথৈ জলে পড়ে। ফলে ন্যূনতম ব্যালান্স সংক্রান্ত জরিমানা থেকে সরে আসছে ব্যাঙ্ক। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের পদাধিকারীদের মতে, এই সিদ্ধান্ত সাধারণ গ্রাহককে আর্থিক রেহাই দেবে। তাঁরা সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে উৎসাহিত হবেন। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজের নাগর বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক জনসাধারণের। এই ব্যাঙ্কগুলিতে বেশ কয়েক বছর আগে ন্যূনতম ব্যালান্স না রাখলে পেনাল্টি বা জরিমানা নেওয়ার প্রশ্ন ছিল না। যবে থেকে এই নিয়ম চালু হয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রচার চলেছে। কারণ, জরিমানার নামে সাধারণ মানুষকে শোষণ করা হয়েছে।