বাংলা সাহিত্যে মহিলা গোয়েন্দা

বিন্দিপিসি কাঁথা বুনতে বুনতেই বহুকাল আগের একটি হত্যারহস্যের কিনারা করে ফেলেন।

November 11, 2022 | 3 min read
Published by: Drishti Bhongi

সৌভিক রাজ

শারদিন্দুবাবু, মানিকবাবুদের জন্যে বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দাদের বড় বাড়বাড়ন্ত! কিন্তু গোয়েন্দা বলতেই মনে পড়ে পুরুষ গোয়েন্দাদের কথা। চারমিনার, পাইপ, কোল্ট .৩২ ধরা বা হ্যাট-কোট পরা দাদাদের ভিড়ে দিদিরাও জমিয়ে গোয়েন্দাগিরি করেছেন। বলা ভাল, পাল্লাও দিয়েছেন! সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের বিন্দিপিসির মাধ্যমে মহিলা গোয়েন্দাকে বহু আগেই পেয়েছেন বাঙালি পাঠক। বিন্দিপিসি কাঁথা বুনতে বুনতেই বহুকাল আগের একটি হত্যারহস্যের কিনারা করে ফেলেন। অদ্রীশ বর্ধন সৃষ্টি করেছিলেন নারায়ণীকে, সেও এক মহিলা গোয়েন্দা।

বাংলা সাহিত্যের মহিলা গোয়েন্দাদের খুঁজলো দৃষ্টিভঙ্গি :

১) গোয়েন্দা গন্ডালু :

গোয়েন্দা গণ্ডালু সমগ্র (দুই খণ্ডের সেট) | Baatighar

১৯৬১ সাল নাগাদ নলিনী দাশ লিখতে শুরু করেন গোয়েন্দা গণ্ডালুর গপ্পো। চার বন্ধু কালু, মালু, টুলু এবং বুলু; বোর্ডিং স্কুলের এই চার ছাত্রীকে নিয়েই গোয়েন্দা গণ্ডালু। খুদে পাঠক পাঠিকাদের মধ্যে এই কাহিনী জনপ্রিয়ও হয়েছিল।

২) মিতিন মাসি :

সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কলম থেকে ২০০২ সালে আনন্দমেলার পুজো সংখ্যার পাতায় প্রজ্ঞাপারমিতা মুখার্জি ওরফে ​মিতিন মাসির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা পায় মিতিন মাসি। সেই অর্থে বলতে গেলে, মিতিন মাসির হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যের প্রথম কোন মহিলা গোয়েন্দা চরিত্র জনপ্রিয়তার চরম শিখরে পৌঁছয়। এই সিরিজে সুচিত্রা দেবী একের পর এক কাহিনী রচনা করে গিয়েছেন। মিতিন মাসির গল্প নিয়ে সম্প্রতি চলচ্চিত্রও তৈরি হয়েছে। মিতিন মাসির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কোয়েল মল্লিক।

৩) কৃষ্ণা :

বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা গোয়েন্দা হল কৃষ্ণা। পাঠকের কাছে গত শতকের পাঁচের দশকে মহিলা গোয়েন্দা গল্প নিয়ে এসেছিলেন প্রভাবতী দেবী সরস্বতী। দেব সাহিত্য কুটিরের হাত ধরেই ১৯৫২ সালে কৃষ্ণার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। প্রহেলিকা ও কাঞ্চনজঙ্ঘা, এই দুটি রচনার এক কৃষ্ণা চরিত্রটি চরম জনপ্রিয়তা পায়, কৃষ্ণা সিরিজের মোট ১১টি উপন্যাস রয়েছে।

৪) দময়ন্তী সেন :

সত্তরের দশকে মনোজ সেনের হাত ধরে গোয়েন্দা দময়ন্তী সেনের মাধ্যমে মহিলা গোয়েন্দাকে পায় বাংলা সাহিত্য। ১৯৭৪ সালে রোমাঞ্চ পত্রিকায় দময়ন্তীর আত্মপ্রকাশ। সেই সময় দময়ন্তীকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গল্প লিখেছিল মনোজ সেন। সম্প্রতি আবার শিরোনামে এসেছে এই সিরিজ। ফের গল্প প্রকাশিত হচ্ছে, ওটিটি মাধ্যমেও নিয়মিত আসছে দময়ন্তীর রহস্য অনুসন্ধান।

৫) গোয়েন্দা গার্গী :

নব্বইয়ের দশকে তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে জন্ম হয় গোয়েন্দা গার্গীর, সে গণিতের ছাত্রী এবং সখের গোয়েন্দা। যদিও পরে পুরদস্তুর গোয়েন্দায় পরিণত হয়েছিলে গার্গী ওরফে গার্গী ব্যানার্জী। এই চরিত্রটি আনন্দবাজারের রবিবাসরীয় পাতায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। রুপোলি পর্দাতেও গার্গীকে নিয়ে কাজ হয়েছে। গার্গী সিরিজের প্রায় ত্রিশটির মতো উপন্যাস রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen