মোদী মনে করেন বিহারের মতোই বাংলায় জিততে পারবেন, তবে পাঁচটি কারণে তিনি ভুল প্রমাণিত হবেন
সাগরিকা ঘোষ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩০: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-র জয়ের পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “গঙ্গা বিহারের মধ্য দিয়ে বাংলায় প্রবাহিত হয়। বিহারের জয়, গঙ্গার মতোই বাংলায় আমাদের জয়ের পথ প্রশস্ত করেছে।”
ভূগোল এবং নির্বাচনী রাজনীতির এহেন তুলনা, নির্বাচন সম্পর্কে মোদীর দৃষ্টিভঙ্গির সাক্ষ্য বহন করে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, নির্বাচনে জয় হল একটি অঞ্চলের উপর বিজয় অর্জন, ভৌগোলিক অঞ্চলের উপর সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য বিস্তার, আধিপত্যবাদের ঔদ্ধত্য। মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নির্বাচনী প্রচারকে একটি অশ্বমেধ যজ্ঞ হিসাবে দেখেন, একটি রাজসিক অপ্রতিরোধ্য ঘোড়ার অনিয়ন্ত্রিত হানা, যা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছুটে বেড়ায়।
বিজেপি নেতৃত্ব নির্বাচনকে মত প্রকাশের স্বাধীনতার আধুনিক সংস্করণ হিসাবে দেখেন না, বরং বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের উপর বিজয়ী সেনাবাহিনীর পদযাত্রা, সাম্রাজ্য বিস্তারের একটি পন্থা হিসাবে দেখেন। সুতরাং, বাংলা এবং বিহার হল ভূখণ্ড, ভূমি ছাড়া আর কিছুই নয়, যেখানে বিজেপি অনিবার্যভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে, ঠিক যেমন একটি প্রকাণ্ড নদী ভূ-প্রকৃতির মধ্য দিয়ে অবিশ্রান্তভাবে উত্তাল গতিতে বয়ে চলে। বিহারের বিজয়ের পর মোদী বিশ্বাস করেন যে, বাংলাও একই পথ অনুসরণ করবে।
দুঃখিত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ভুল বুঝছেন। বাংলা বিহার নয় এবং কখনও বিহার হবে না। বিজেপি কখনও বাংলা জয় করতে পারবে না। কেন, নিম্নে কারণগুলি রইল।
অপ্রতিরোধ্য নেত্রী
প্রথমত, নেতৃত্ব। বাংলায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমকক্ষ কেউ নেই। বিজেপির কোনও মুখ বা অন্য কোনও দলের কোনও সদস্য— মর্যাদা, কৃতিত্ব বা জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের নিরিখে
তাঁর সঙ্গে তুলনায় আসেন না। অদ্যাবধি শেষ কয়েকজনের মধ্যে তিনি ভারতের অন্যতম সেরা জননেত্রী, এক অনন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। একজন একা মহিলা, যাঁর কোনও পূর্বপুরুষ রাজনৈতিক জগতে ছিলেন না। সম্পূর্ণরূপে একক সংগ্রামের মাধ্যমে একটি দল এবং আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তিনি।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্ভীকভাবে রাস্তায় নেমে বাম সন্ত্রাসের মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি নিত্যদিন মানুষের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, প্রতি সপ্তাহে বাংলার বিভিন্ন অংশে গিয়েছেন। তিনি দরিদ্রদের জন্য একজন প্রকৃত বন্ধু, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় একজন সহায়ক। দিদি কখনও জনগণের পক্ষ ত্যাগ করেন না। দিদি সর্বদা পাশে থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কষ্টসহিষ্ণু, কর্মজীবনের জাঁকজমককে কখনও তিনি তাঁর পরিচয় বদল করতে দেননি। সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস-র (ADR) এক প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে তিনি দরিদ্রতম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী, সাতবারের সাংসদ এবং চারবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, যা তাঁকে আজ দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ জীবত প্রশাসকদের মধ্যে একজন করে তুলেছে। বিহারে, নীতিশ কুমারের মতো ব্যক্তিত্ব, রাজ্যের জন্য যাঁর দীর্ঘ বছর কাজ করে যাওয়া, তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং মহিলা ভোটারদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ, এনডিএ-কে জয় এনে দিয়েছে। বিজেপি নীতীশ কুমারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গিয়েছে। বিহার নির্বাচনে এনডিএ-র জয় আদতে ছিল নীতীশের জয়, মোদীর নয়।
আজ বাংলায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব এবং তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা অপ্রতিরোধ্য। বাংলায় বিজেপির কোনও নীতিশ কুমারের মতো মুখ নেই। দলের মুখ শুভেন্দু অধিকারী, কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হননি। তিনি কেবল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সদস্যই নন, তাঁর রূঢ়, অসংলগ্ন কথাবার্তা, জনসমক্ষে তাঁর অপ্রীতিকর, আক্রমণাত্মক আচরণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার; বাংলার পরিশীলিত ভোটারদের কাছে বিকল্প হিসাবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা খারিজ করে দেয়।
মহিলা ফ্যাক্টর
বিহারের মতো বাংলায় বিজেপি কখনই জয়লাভ করতে পারবে না, তার দ্বিতীয় কারণ হল মহিলা ফ্যাক্টর। বিহারে, বিজেপি জোট নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘুষের ন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনার অধীনে ১০,০০০ টাকা দিয়েছিল। নির্বাচন চলাকালীন সরাসরি টাকা বিতরণ করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, বিহারে পুরুষদের তুলনায় মহিলা ভোটারদের ভোটদানের হার প্রায় ১০ শতাংশ বেশি ছিল।
বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল নারী ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়ন। বাংলার সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ চলছে। জনপরিষেবায় তা জাতিসংঘের পুরষ্কার পেয়েছে।
অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রূপশ্রী প্রকল্প, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প এবং স্বাস্থ্য সাথী কর্মসূচির মতো আরও অনেক প্রকল্প। স্বাস্থ্য সাথী-তে চিকিৎসা বীমা প্রদানের ক্ষেত্রে নারীকে পরিবারের প্রধান হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় (পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক মহিলাকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়)। নারীদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী বহুমাত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই ধরনের প্রকল্পগুলি মূলত শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে, ছোট ব্যবসার জন্য অর্থ বরাদ্দ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার তহবিলকে ঋদ্ধ করে। বাংলায় কেবলমাত্র নির্বাচনের আগে নারীদের এককালীন অর্থ প্রদান করা হয় না। বরং, উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারী-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিই সরকারি ঘোষিত নীতি।
বিহারের মতো, বাংলায় রাজনীতিতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব পিছিয়ে নেই। বিহারে নতুন মন্ত্রিসভায় মাত্র তিনজন মহিলা রয়েছেন। এই মুহূর্তে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় ৪০ শতাংশ সাংসদ মহিলা। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক এবং লোকসভায় উপ দলনেতা মহিলা। জয়এর সম্ভাবনা রয়েছে, এমন আসনে মহিলা প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয় তৃণমূল।
ন’জন মহিলা রাজ্য সরকারে মন্ত্রীর পদে রয়েছে, তাঁদের অধীনে অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক রয়েছে।
তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতার মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নারীদের অটুট সমর্থন অর্জন করেছেন। মহিলা ভোট তাঁর পাশে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিজেপির পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে মহিলা ভোট ছিনিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব, বিশেষ করে যখন মোদীকেও নারী বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে “দিদি-ও-দিদি” বলে চিৎকার করতে শোনা যায়। বাংলায়, আপনি নারীদের উপর চিৎকার করবেন আবার তাঁদের ভোট আশা করবেন, তা হয় না।
“নিরাপত্তাহীন ” মিথ
তৃতীয়ত, বিহারে, বিজেপি লালু প্রসাদ যাদবের সময়কালকে “জঙ্গলরাজ” হিসেবে সফলভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরেছে। আইনশৃঙ্খলাহীন ও হিংসাপীড়িত একটি সময়, যা জনসাধারণকে আতঙ্কিত করেছিল। বিজেপি এবং তাদের ভুয়ো তথ্য ও প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর মাধ্যমগুলি এখন বাংলাকে “অনিরাপদ” হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য মরিয়া চাপ দিচ্ছে। বাংলার ভয়াবহতা দেখানোর জন্য মূলধারার টিভি সঞ্চালকেরা চিৎকার করে উস্কানিমূলক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করেন। কিন্তু সত্যের জয় হচ্ছে।
বিজেপি কর্তৃক প্রচারিত সন্দেশখালিতে তথাকথিত “গণধর্ষণ”, মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। গত বছর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অপরাধীকে দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং সাম্প্রতিক দুর্গাপুরের ঘটনাটি কিছুটা ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছিল। দুর্গাপুরে প্রতিবাদ করতে আসা বিজেপি এখন হঠাৎ করেই নীরব হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা পুলিশ অত্যন্ত পারদর্শী, তারা কেবল অপরাধের কিনারাই করে না, বিশাল জনতাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। দুর্গাপুজোর সময় লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ জনের বাহিনী মোতায়েন করা হয়, যাতে কোনওরকম পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে। বাংলা গত বছর নারীদের নিরাপত্তার জন্য কঠোর অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল পাস করেছিল। গত চার বছর ধরে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো কলকাতাকে নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ শহরগুলির মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত করেছে। “নিরাপত্তাহীন বাংলা” হল বিজেপির একটি মিথ যা বাংলার ভোটাররা সত্যি জানেন।
বাংলার উন্নয়ন এবং পরিচয়
চতুর্থত, বিহারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বাংলার বিপ্রতীপ, শিল্পবিমুখতার কারণে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য জর্জরিত, বাংলা এগিয়ে চলেছে। ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন কলকাতাকে পরবর্তী আইটি হাব হিসাবে উল্লেখ করেছে। চলতি বছরের প্রথমদিকে, বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বাংলা সফলভাবে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট আয়োজন করেছে। রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ২০১০-২০১১ সালে ৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি হয়েছে। বাংলার উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশেরও বেশি।
হ্যাঁ, গভীর প্রতিবন্ধকতা রয়ে গিয়েছে। শিল্পের প্রতি বামফ্রন্টের তিন দশকের বৈরীতা অনেক ক্ষতি করেছে, কিন্তু সেই অস্থিরতা চিরতরে দূর হয়েছে। ভুয়ো তথ্যের প্রচারে যে, দুর্দশা ও দারিদ্র্যের অন্ধকার অতল গহ্বর দেখা যাচ্ছে, তা থেকে বাংলা এখনও অনেক দূরে। অর্থনীতি ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে, একটি প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ একটি উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে তুলছে। শিল্পসংস্থাগুলি বাংলায় ফিরে আসছে।
পঞ্চমত, বাংলার পরিচয়, শিকড় বাংলা ভাষা, ভক্তিবাদের ঐতিহ্য, রন্ধনপ্রণালী এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের মধ্যে প্রোথিত। বাঙালির পরিচয়কে কখনই বিজেপির হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানের ছত্রছায়ায় আনা যাবে না। বাংলার পরিচয় বিশ্বজনীনতাকে প্রতিফলিত করে, যা ধর্মীয় পার্থক্যের বদলে ভাষা এবং তার উত্তরাধিকারের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ‘ভদ্রলোক’ সংস্কৃতি সমাজের একটি সংখ্যালঘু অংশীদার হতে পারে, তবুও শক্তিশালী ঐক্য, সহজাত প্রগতিশীল মূল্যবোধ এবং অভিন্ন ভাষাগত ঐতিহ্য বিভক্ত হওয়ার বদলে একত্রিত হয়।
ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাকে ভাগ করা, সর্বদাই একটি ঔপনিবেশিক পরিকল্পনা ছিল, প্রথমে ব্রিটিশদের অধীনে এবং এখন নব্য-ঔপনিবেশিক সঙ্ঘ পরিবারের অধীনে, কিন্তু এই ধরনের ধর্মীয় মেরুকরণকে একাধিক ধারার ঐক্যবদ্ধ শক্তি দ্বারা প্রতিহত করেছে বাংলা- ভাষা, রন্ধনপ্রণালী, একই সঙ্গে সহাবস্থান এবং প্রাচীন সম্প্রদায়ের মেলবন্ধন।
বিজেপির এক ভাষা-এক খাদ্য-এক পোশাক-এক ধর্মের নীতি বাংলায় খুব কম মানুষই গ্রহণ করে, যাঁরা নিজের
অনন্য পরিচয়ের প্রতি তীব্রভাবে অনুরক্ত। জাতিসত্ত্বা হিসাবে বিহারী পরিচয়কে বিস্তৃত অনুভূতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাংলার বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের প্রতি বাঙালিদের আবেগের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। বাংলায় কথা বলা হোক বা আমিষ খাবার খাওয়া হোক বা মা দুর্গা এবং মা কালীর মতো দেবীর পুজো করা হোক; একজন বাঙালি তাঁর পরিচয়ের চিহ্নগুলিকে একটি উত্তর ভারতীয় হিন্দিভাষী রাজনৈতিক দলের কাছে সমর্পণ করতে পারে না। যাঁরা বাইরে থেকে বাংলাকে দেখেন, তাঁদের কাছে এই সম্মিলিত স্মৃতি এবং আবেগের অদৃশ্য আবরণ দুর্বোধ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, “বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা, সত্য হোক, সত্য হোক, সত্য হোক…” হিন্দি আধিপত্যের স্বার্থে বাংলার মূল্যবান পরিচয় মুছে ফেলার লক্ষ্যে সঙ্ঘ পরিবারের কোনও কর্ম কাণ্ডের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও সম্পর্ক থাকবে না।
সুতরাং, না, মাননীয় মোদী, আপনি ভুল করছেন। বিহার থেকে বাংলায় গঙ্গা যেভাবে প্রবাহিত হচ্ছে, বিজেপি সেভাবে বাংলা জয় করতে পারবে না। গঙ্গা নদীতে, বাংলা বিজেপির জন্য অনেক দূরে অবস্থিত একটি সেতু এবং দীর্ঘ সময় যাবৎ তা দূরেই থাকবে।
প্রবন্ধটি ThePrint-এ প্রকাশিত হয়েছে