প্রথম দিনেই বাংলায় কোর্বেভ্যাক্স টিকা নিল ৮৯ হাজার ১২-১৪ বছরের পড়ুয়ারা

কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনাতেও টিকাকরণ হয়েছে।

March 22, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

দোলযাত্রার পরে পঠনপাঠন সবে শুরু। তাই সোমবার, প্রথম দিনে সব স্কুলে করোনার টিকাকরণ শুরু করা যায়নি। তবে কোউইন পোর্টালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রথম দিনেই রাত ৮টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৮৮,৮৪২ জন কিশোর-কিশোরী কোর্বেভ্যাক্স প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় পেয়েছে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। টিকা নেওয়ার পরে কারও কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর রাত পর্যন্ত স্বাস্থ্য ভবানে পৌঁছয়নি। প্রত্যেক পড়ুয়ার যোগাযোগের নম্বর নিয়ে রেখেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে এ দিন রাজ্যে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচির সূচনা হল। রাজ্যের ৩০ লক্ষ ৫০ হাজার পড়ুয়াকে টিকা দিতে চায় সরকার।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, এ দিন রাজ্যের ৩৩৪টি স্কুলে ‘সিভিসি’ (কোভিড ভ্যাকসিনেশন সেন্টার বা কোভিড চিকাকরণ কেন্দ্র) খোলা হয়েছিল। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতাল, ব্লক এবং শহরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ৩৫৬টি কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, দোলের ছুটির পরে স্কুলগুলি এ দিনেই প্রথম খুলেছে। তাই প্রথম দিনে সব স্কুলেই যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা গিয়েছে, তা নয়। তবে ধীরে ধীরে স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের ক্যাম্পাসে ওই কর্মসূচি চালু করতে পারবে।

কোথাও প্রস্তুতির অভাব। কোথাও বা প্রস্তুতি সত্ত্বেও টিকা নেওয়ার জন্য পড়ুয়ার অভাব। যেমন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না-থাকায় হাওড়া জেলার সব স্কুলে এ দিন টিকাকরণ হয়নি। আবার নদিয়ায় বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রস্তুত থাকলেও বেশি ছেলেমেয়ের দেখা মেলেনি। একটি ‘ভায়াল’ খুললে ১০ জনকে টিকা দিতেই হয়। কম ছেলেমেয়ে থাকায় অনেক জায়গায় ‘ভায়াল’ খোলাই যায়নি। ফলে টিকা না-নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনেক ছেলেমেয়েকে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামেও টিকাকরণের জন্য হাজিরা কিছুটা কম ছিল। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য-জেলায় অন্তত আট হাজার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঁচ হাজার কিশোর-কিশোরী টিকা নিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের দাবি, মোবাইলে সময়মতো মেসেজ না-পাওয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুরে অনেক পড়ুয়া টিকা নিতে যায়নি। তবে কোউইন পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে এ দিন সমস্যার খবর সে-ভাবে মেলেনি বলেই জানান রাজ্যে টিকাদানের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অসীম দাস মালাকার।

টিকা দেওয়ার সুবিধা-অসুবিধা দেখে নিতে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য-জেলায় সীমিত সংখ্যক (২০টি) স্কুলে টিকাকরণ কর্মসূচি হয়। স্কুলপিছু লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০-৩০০-র মধ্যে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা ও পাথরপ্রতিমা ব্লকে দু’‌শোর কাছাকাছি, ক্যানিং-১ ব্লকে কমবেশি দু’হাজার, বাসন্তী ব্লকে প্রায় ১৫০ জন, গোসাবা ব্লকে প্রায় ২০০ জন, মুর্শিদাবাদে ৭০৯, পশ্চিম বর্ধমানে ৭৩০, মালদহে ৮৭০, বাঁকুড়ায় ১১৩৭, জলপাইগুড়িতে ৩৮০২, পূর্ব বর্ধমানে ৪৫৪০, উত্তর দিনাজপুরে কমবেশি পাঁচ হাজার জন টিকা নিয়েছে। রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলে টিকা নেওয়ার সময় কিছু পড়ুয়া অসুস্থ বোধ করে। সেখানে টিকার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক পবিত্ররঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা ভয়ে অসুস্থ বোধ করছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’’ এ ছাড়া কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনাতেও টিকাকরণ হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen