নতুন বছরের প্রথম দিনে কলকাতার আশেপাশে কোথায় কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন?

কলকাতা শহরের আনাচকানাচে লুকিয়ে আছে নানা গল্প, নানা কথা, নানা ইতিহাস। চলুন এ’বছর তিলোত্তমা কলকাতায় মিঠে রোদ গায়ে মেখে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই-

January 1, 2025 | 4 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নতুন বছরে বাড়ি বসে থাকবে না। থাক না আগামীকাল অফিসে, কলকাতার আশপাশেও তো কত জায়গা রয়েছে। হাফ বেলার ট্যুর সেরে ফেলতেই পারেন। কলকাতা শহরের আনাচকানাচে লুকিয়ে আছে নানা গল্প, নানা ইতিহাস। বছরের প্রথম দিন মিঠে রোদ গায়ে মেখে ঘুরেই আসুন।

কলকাতা শহরের আনাচকানাচে লুকিয়ে আছে নানা গল্প, নানা কথা, নানা ইতিহাস। চলুন এ’বছর তিলোত্তমা কলকাতায় মিঠে রোদ গায়ে মেখে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই-

চিড়িয়াখানা

চিড়িয়াখানা ছবি সৌঃ আনন্দবাজার

যাত্রা শুরু করুন চিড়িয়াখানা থেকে। সকলে একসঙ্গে দেখা করে নিন পিটিএসএ বা ন্যাশনাল লাইব্রেরির সামনে। সেখান থেকে খুব সামনেই চিড়িয়াখানা। সকাল ৯টা নাগাদ খুলে যায় চিড়িয়াখানা। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই আলিপুর চিড়িয়াখানার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট দেখে নেবেন। সেখানে টাইম আর কত টাকা দিয়ে ঢুকতে হয় সব লেখা আছে। আপনি আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে যেমন অনেক জন্তু, পাখি এসব দেখতে পাবেন, তেমনই খুব ভাল ভাল জায়গাও পেয়ে যাবেন বসে গল্প করার জন্য। খবরের কাগজ বা চাদর নিয়ে যান, পেতে বসে আড্ডা দিন পরিবারের সকলের সঙ্গে।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ছবি সৌঃ গুগুল

চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে কিছুটা হাঁটলেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দুই ভাবে আপনাকে আনন্দ দিতে পারে। এক হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে যে মিউজিয়াম আছে সেই মিউজিয়ামে ঢুকে নানান ঐতিহাসিক জিনিস দেখার মাধ্যমে। আর তার বাইরে যে সুন্দর সবুজ বাগান, সুন্দর জলাশয় এসব রয়েছে, সেই সবের মধ্যে আপনি অপার আনন্দ পাবেন। এখানে সকলে মিলে বসে সহজেই সময় কাটাতে পারেন। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেখে নেবেন ১লা জানুয়ারি ওই মিউজিয়ামে আপনাদের ঢুকতে দেওয়া হবে কিনা!

সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ

সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ , ছবি সৌঃ গুগুল

নতুন বছরে চার্চে যাবেন না, তা কি হয়! আর কলকাতায় চার্চ বলতেই আগে মনে পড়ে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ। সুন্দর করে সাজানো এই চার্চ এই শীতের সময়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। ভিক্টোরিয়ার ঠিক পিছনেই বলা যায় এই চার্চ। এই চার্চের ভিতরে গিয়ে বেঞ্চিতে খানিক চুপ করে বসতে পারেন। আমরা এই সময়ে সবাই তো খুব চিন্তিত ভিতরে ভিতরে, বেশ খানিক অশান্ত আমাদের মন। এই জায়গা আপনাদের মনে শান্তি এনে দেবে। আর চার্চের চারপাশটা, মানে যাকে ইংরাজিতে আমরা বলি প্রেমাইসেস, সেখানেও খানিক ঘুরতে পারেন। খুব সুন্দর লাগে এই সময়টা ওখানে।

আর বি আই মিউজিয়াম

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মিউজিয়াম এটি। আমাদের আজ অবধি কীভাবে অর্থনৈতিক নানা পরিবর্তন এসেছে, মুদ্রার কি পরিবর্তন হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কি গুরুত্ব পালন করেছে, সব নিয়ে এই মিউজিয়াম। খুব একটা কেউ কিন্তু আজও এখানে যান না। তবে গেলে কিন্তু আপনি অবাক হয়ে যাবেন। ইতিহাস আপনার সামনে জীবন্ত হয়ে উঠবে। কোনও এন্ট্রি ফি কিন্তু এখানেও নেই। আর বিবাদি বাগের কাছেই এটি। সুতরাং একবার ঘুরে আসতেই হবে।

প্রিন্সেপ ঘাট

আর বি আই মিউজিয়াম থেকে চলে যান প্রিন্সেপ ঘাট। প্রিন্সেপ ঘাটটি গঙ্গার ধারে অবস্থিত এবং নদীর তীরে দেখা যায়। এটি ১৮৪১ সালে বিশিষ্ট অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পণ্ডিত এবং পুরাকীর্তি জেমস প্রিন্সেপের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছিল। ডব্লিউ ফিটজেরাল্ড দ্বারা ডিজাইন করা স্মৃতিস্তম্ভটি এখনও কলকাতার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে। প্রিন্সেপ ঘাট থেকে গঙ্গা এবং দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সুন্দর দৃশ্য মন ভাল করে দেয়। যে সমস্ত ভ্রমণকারীরা ঘুরতে চান তাদের বসার জন্য কাছাকাছি পর্যাপ্ত আসন রয়েছে এবং নদীর ধারে আরাম করুন। আপনি কাছাকাছি স্টল থেকে কিছু খাবর কিনে উপভোগ করতে পারেন।

পার্ক স্ট্রিট

অনেক হাঁটা হয়েছে, এবার তো খেতে হবে। আর বছরের প্রথম দিনে খাওয়া মানে পার্ক স্ট্রিট। মোকাম্বো, মার্কোপোলো, টুংফং, পিটার ক্যাট, বারবি কিউ ন্যাশন কত নাম বলব! জ্যোমাটো দেখুন, ম্যানু ঠিক করুন আর ঢুকে যান। ভাল করে খেয়ে আপনি যখন বাইরে আসবেন তখন প্রায় বিকেল হয়ে গেছে। আর বিকেল মানেই পার্ক স্ট্রিটে অনেক অনেক আলো। সেই আলোয় ভাসতে ভাসতে চলে যান অ্যালেন পার্ক। গান শুনুন, নাচুন, আনন্দ করুন। এই সময়ে পার্ক স্ট্রিটের ফুটপাথ জুড়ে খুব ভাল ভাল খাবার নিয়ে বসা হয়। সেগুলিও চেখে দেখতে পারেন। রাত যত বাড়বে, পার্ক স্ট্রিটের আনন্দ তত বাড়বে। এবার কত রাত পর্যন্ত আপনি থাকবেন তা আপনার ওপর।

আবার চাইলে অনেক চলে যেতেই পারেন সল্টলেক, নিউটাউনের দিকে। সেখানে বছরের প্রথম দিনটা পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন। যে জায়াগায় যাবেন-

ইকো পার্ক-

দিনভর চুটিয়ে পিকনিকের সেরা ঠিকানা এখন ইকোপার্ক। তবে বড়দিন ও নিউইয়ার উপলক্ষ্যে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। মুখে মাস্ক থাকা জরুরী। প্রতিটি জায়গা ঘণ্টায় ঘণ্টায় সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত। পরিবারের ছোট বড় সকলের জন্যই এখানে বিশেষ বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

নিক্কো পার্ক

সল্টলেকে অবস্থিত মোট ৪০ একর এলাকায় বিস্তৃত চিত্তবিনোদনমূলক পার্ক হিসেবে নিক্কোপার্ক রাজ্যের পর্যটকদের আকৃষ্ট হওয়ার অন্যতম স্থান। বিভিন্ন আনন্দদায়ক রাইডস্ এ-র পাশাপাশি এখানে নৌকা চালানোর জন্য লেক রয়েছে।

মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়াম

মাদার্স ওয়াক্স মিউজিয়াম, ছবি সৌঃ গুগুল

নিউ টাউন এ অবস্থিত এই মোম শিল্পকর্মের জাদুঘরটি ভারতের প্রথম এমন জাদুঘর। প্রায় পঞ্চাশটি মোমের মূর্তি সমৃদ্ধ এই জাদুঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চন, মহাত্মা গান্ধী, মাদার টেরিসা ছোটদের সুপারম্যান, মটু পাতলু সকলের মোমের মূর্তি বর্তমান।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen