Thailand-Cambodia Conflict: ভারতের দ্বারে যুদ্ধ? থাইল্যান্ড-ক্যাম্বোডিয়ার লড়াইয়ে প্রাণ গেল ৯জনের
ক্যাম্বোডিয়ান সেনা থাইল্যান্ডের ভূখণ্ডে রকেট ও আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে। থাই মিলিটারি পাল্টা এয়ারস্ট্রাইক চালায়।

দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ ফের রূপ নিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড (Thailand) এবং ক্যাম্বোডিয়ার (Cambodia) মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যখন ক্যাম্বোডিয়ান সেনা থাইল্যান্ডের ভূখণ্ডে রকেট (Rockets) ও আর্টিলারি শেল (Artillery Shells) নিক্ষেপ করে। জবাবে থাই মিলিটারি (Thai Military) আকাশপথে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান (F-16 Fighter Jets) নামিয়ে পাল্টা এয়ারস্ট্রাইক (Air Strike) চালায়।
এই সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯জন সাধারণ মানুষ, যাঁদের মধ্যে একজন শিশু ছিল বলেই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা রয়টার্স । বহু আহতকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বহুদিন পর দেখা গেল থাই-ক্যাম্বোডিয়া সীমান্তে।
এই হিংসার কেন্দ্রে রয়েছে এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গেল (Emerald Triangle) – এক বিতর্কিত এলাকা যেখানে থাইল্যান্ড, ক্যাম্বোডিয়া ও লাওসের (Laos) সীমান্ত মিলেছে। এই অঞ্চলে রয়েছে একাধিক প্রাচীন হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির, যেগুলিকে কেন্দ্র করেই দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষ মূলত ঘটে থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশ (Surin Province) ও ক্যাম্বোডিয়ার ওদ্দার মেঞ্চে (Oddar Meanchey) সীমান্তে, দুই প্রাচীন মন্দিরের আশেপাশে।
দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষ শুরু করার অভিযোগ এনেছে। থাইল্যান্ড দাবি করছে, প্রথম হামলা করেছে ক্যাম্বোডিয়া। আবার ক্যাম্বোডিয়ান সরকার বলছে, থাই সেনার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়াতেই তারা আত্মরক্ষা করেছে।
সামরিক সংঘর্ষের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই থাইল্যান্ড ক্যাম্বোডিয়ান রাষ্ট্রদূতকে (Cambodian Ambassador) বহিষ্কার করে এবং নিজের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনে। কারণ? একটি থাই সেনা পেট্রল দলের ওপর ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন জওয়ান গুরুতর জখম হন। ওই বিস্ফোরণেই আরও এক সৈনিক একটি পা হারান, যা এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার।
থাই সরকারের দাবি, বিতর্কিত সীমান্তে সদ্য পুঁতে রাখা মাইন (Landmine) থেকেই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। থাইল্যান্ড এই ঘটনার জন্য সরাসরি ক্যাম্বোডিয়াকেই দায়ী করছে।
এমন নয় যে এই সংঘর্ষ নতুন কিছু। প্রায় দু’দশক ধরে থাইল্যান্ড ও ক্যাম্বোডিয়া এই সীমানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে রয়েছে। ১৫ বছর আগেও এই একই ইস্যুতে দু’দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল। চলতি বছরের মে মাসেও সংঘর্ষে প্রাণ হারান এক ক্যাম্বোডিয়ান সেনা।
দুই দেশের এই বিবাদ আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তৈরি করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলিও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু সীমান্তে যেভাবে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে, তাতে দুই দেশের সম্পর্ক যে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।