দেশ বিভাগে ফিরে যান

ফের ব্রাত্য বাংলা, শুধু বিজেপি শাসিত রাজ্যের মেল-এক্সপ্রেস ট্রেনে মান্থলি চালু রেলের

November 10, 2021 | 2 min read

ফের বাংলার প্রতি রেলের বঞ্চনা! উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ সহ বিজেপি শাসিত রাজ্য নিয়ে গঠিত নর্দান রেলওয়ে সেপ্টেম্বর মাস থেকেই মেল, এক্সপ্রেস স্পেশাল ট্রেনে মান্থলি চালু করলেও বাংলায় তা হয়নি। কোলফিল্ড, ময়ূরাক্ষী, অগ্নিবীণা, ব্ল্যাক ডায়মন্ড, সিউড়ি, শান্তিনিকেতন এক্সেপ্রেসের মতো জনবহুল ট্রেনে বারবার মান্থলি টিকিটে যাতায়াতের সুবিধা দেওয়ার আর্জি‌ জানানো হলেও রেল তাতে কর্ণপাত করেনি। দেশের ম঩ধ্যে একটি বিশেষ এলাকার মানুষকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া নিয়ে রেলের নিত্যযাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে। বছর ঘুরলেই যোগী রাজ্যে ভোট। সেকথা মাথায় রেখেই কি উত্তরপ্রদেশের জন্য বাড়তি সুবিধা? এনিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা চিঠি দিয়েছেন রেলমন্ত্রীকেও। যদিও রেল এখনও এনিয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি।


আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক সুবলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, লোকাল ছাড়া বাকি সব ট্রেনে এখনও রিজার্ভেশনের মাধ্যমেই যাতায়াত করতে হয়। যখন ট্রেনগুলিতে অসংরক্ষিত কম্পার্টমেন্ট রাখা হবে, তখন মান্থলি চালু করার ভাবনা রয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলার রেল পরিষেবা নতুন মাত্রা পেয়েছিল। একের পর এক প্রকল্পের পাশাপাশি বহু নতুন ট্রেন চালু হয়েছিল। দরিদ্র মানুষের জন্য সস্তার মান্থলি ‘ইজ্জত’ চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তিনি রেলমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর বাংলার ভাগ্যে শুধুই বঞ্চনা। বাংলার একের পর এক প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দে কাটছাঁট করা হয়। এবার মান্থলি টিকিট নিয়েও চরম বঞ্চনার অভিযোগ উঠল। 


৩ সেপ্টেম্বর নর্দান রেলওয়ে নতুন মান্থলি টিকিট ও রিনিউ করানোর অর্ডার জারি করে। স্বস্তি ফিরে আসে ওই এলাকার নিত্যযাত্রীদের। কারণ প্রতিদিন যাঁরা ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁদের পক্ষে টিকিট কাউন্টারে লা‌ইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটা যথেষ্ট বিড়ম্বনার। এই অবস্থায় নর্দান রেলওয়ের নোটিসে আশার আলো দেখেছিলেন বাংলার নিত্যযাত্রীরাও। তাঁরাও আশা করেছিলেন, এরাজ্যেও সেই সুযোগ মিলবে। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বাংলার জন্য এই সুবিধা চালু করা হয়নি। বাধ্য হয়েই রেলমন্ত্রী সহ রেলের সব পদস্থ আধিকারিককে চিঠি দেন নিত্যযাত্রীরা। চিত্তরঞ্জন, আসানসোল, অণ্ডাল, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ সহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ এই এলাকার জনপ্রিয় এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিতে নিত্যদিন যাতায়াত করতেন। মান্থলি থাকায় টিকিট কাটারও ঝামেলা ছিল না। কিন্তু ট্রেনগুলি চললেও মান্থলি চালু না হওয়ায় রিজার্ভেশন করে প্রতিদিন যাতায়াত করতে বাড়তি টাকার বোঝা চাপছে সাধারণ মানুষের উপর। এনিয়ে চরম উদাসীন রেল। লোকাল ট্রেনে মান্থলি টিকিট দেওয়া শুরু হলেও অবিলম্বে এক্সপ্রেস ও স্পেশাল ট্রেনগুলিতেও এই সুবিধা চালুর দাবি জানাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। 


নিত্যযাত্রী দেবাশিস দাস বলেন, কেন আমাদের প্রতি এই বঞ্চনা হচ্ছে। নর্দান রেলওয়ে কি ভারতীয় রেলের কোনও বিশেষ অংশ? আমি প্রতিবাদ করে রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।


এদিকে এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। কৃষকহত্যা থেকে নারী নির্যাতন একাধিক ইস্যুতে চাপে থাকা যোগী সরকারকে বাড়তি অক্সিজেন দিতেই কি রেলের এই ভাবনা? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল। সামনেই ভোট, তাই রেলকে দিয়ে ভোটের সুবিধা পাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, বাংলাকে সবদিক দিয়ে বঞ্চনা করে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের কোনও এক প্রান্তের মানুষের জন্য বাড়তি সুবিধা দেওয়া আইনবিরুদ্ধ। দুর্গাপুরের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, দেশের অন্য প্রান্তে যদি মান্থলি চালু হয়ে থাকে, আমাদের এখানে না হলে রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখব। তবে তৃণমূল কী বলছে গুরুত্ব দিতে চাই না। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#northern railway, #monthly, #mail express tarins, #trains

আরো দেখুন