করোনায় মৃত পরিবারের অনাথ শিশুদের দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার, জানালেন ড: শশী পাঁজা
করোনায় মৃত পরিবারের অনাথ শিশুদের দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিধানসভায় নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনায় এই কথা জানিয়ে দেন নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩৩ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পেয়েছেন। খরচ হয়েছে ২১৬৩ কোটি টাকা। এদিনের আলোচনায় তৃণমূলের তরফে অংশ নেন অসীমা পাত্র, রত্না দে নাগ, প্রিয়া পাল, বীরবাহা হাঁসদা প্রমুখ। প্রত্যেকেই রাজ্যে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ওই প্রস্তাবের শেষ বক্তা হিসেবে শশী পাঁজা বলেন, মেয়েরা লক্ষ্মী। ৫০০ টাকা নয়, একজন মহিলাকে লক্ষীর ভাণ্ডারের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়। ওই পরিমাণ অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। আরও যাঁরা আবেদন করেছেন, আগামী দিনে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বরের বরাদ্দ টাকা পেয়ে যাবেন। আমরা ৭২ লক্ষ শিশুকে পুষ্টিযুক্ত খাবার দিচ্ছি। মন্ত্রী বলেন, কন্যাশ্রীতে ৭৫ লক্ষ মেয়ে সুবিধা পেয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে বরাদ্দ ১৩ হাজার কোটি টাকা। পেনশন এবং রূপশ্রী প্রকল্পেরও সুবিধা পেয়েছেন মহিলারা। স্নেহছায়া প্রকল্পের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কোভিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। কোভিডে মৃতদের সন্তানদের এই প্রকল্পে মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়া হচ্ছে।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে বীরবাহা হাঁসদা বলেন, জঙ্গলমহলে ২০১১ সালের পর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নানা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষও তাঁদের মেয়েদের শিক্ষার আলোয় আনতে ভরসা পেয়েছেন। সবুজ সাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প বাবা-মাকে ভরসা দেয় মেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মাধ্যমে মহিলাদের নিজস্ব ক্ষমতা ও মর্যাদা অনেক বেড়েছে। সমাজে মহিলারা অবহেলিত। সেখানে তাঁদেরই প্রাধান্য দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে মহিলাদের নিজের পায়ে দাঁড়াবার ব্যাবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বাংলার মহিলারা মনে করেন, একজন মহিলার হাত ধরেই বাংলার উন্নয়ন হতে পারে। মা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তা সম্ভব হচ্ছে।
প্রিয়া পাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগের অনুকরণে মোদী সরকার ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ চালু করেছিল। তবে বাস্তবে তা প্রচারসর্বস্বই। মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই জনপ্রতিনিধিত্বে মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই একুশ শতকের মা দুর্গাকে জানাই, ‘মা তুঝে সালাম’। মন্ত্রী রত্না দে নাগ বলেন, রাজ্য সরকার নানা প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এতেই নারীর ক্ষমতায়ন জোরদার হয়েছে।
বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন মানে নারীশিক্ষায় প্রসার, নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অনেক রাজ্যে নারী প্রাপ্য মর্যাদা পায় না। লক্ষীর ভাণ্ডার-সহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমে মমতা যখন বাংলার মেয়েদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দুর্ভাগ্য যে, ঠিক তখনই উত্তরপ্রদেশের বহু নারী ধর্ষণের শিকার!