তছনছ এলাকার পর এলাকা, দক্ষিণ থেকে উত্তর কলকাতা লন্ডভন্ড
ভয়াল গতিতে সুন্দরবনেই আছড়ে পড়ল আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন)। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ওই অতি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার ছিল।
সন্ধ্যা ৭টা বেজে ২০ মিনিটে কলকাতায় সেই ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৩৩ কিলোমিটার। এর জেরে লন্ডভন্ড পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা-সহ দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। হাওড়া, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের অবস্থাও ভয়াবহ। হাজার হাজার কাঁচাবাড়ি এবং গাছপালা ভাঙার খবর আসছে এই সব জেলা থেকে। তবে বাস্তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এর অনেক গুণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাত পর্যন্ত কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে নবান্ন থেকে। এর মধ্যে ৩ জন মারা গিয়েছেন কলকাতায়।
গত কয়েক দশকের মধ্য সবচেয়ে বড় দুর্যোগের মুখোমুখি হল কলকাতা। আয়লা, বুলবুল কিংবা ফণী— কোনও ঘূর্ণিঝড়ই এত শক্তিশালী অবস্থায় কলকাতায় প্রভাব ফেলেনি, যতটা তাণ্ডব চালাল আমপান।
উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। তখন কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ গড়ে ১১০-১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ২০০৯ সালে আয়লা যখন সুন্দরবনের উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল, সেখানে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫-১৩০ কিলোমিটার। আর কলকাতায় কার্যত আয়লার লেজের ঝাপটা লেগেছিল। কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ সে বার ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটারের আশেপাশে। তবু কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল শহর। আর আমপানে এ বার কলকাতা আর আশপাশের এলাকা মিলিয়ে সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার।