দেশ বিভাগে ফিরে যান

আগামী দশ বছরেই জলের তলায় চলে যাবে কলকাতা, মুম্বই সহ দেশের উপকূলবর্তী এলাকা, পূর্বাভাস আইপিসিসির

November 13, 2021 | 2 min read

আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে! এতদিন যা ছিল পরিবেশকর্মী ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের সাবধানবাণী, এবার তা কার্যত ভয়াবহ পরিণতির রূপ নিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে হচ্ছে, তাতে এখনই বিরাট কোনও ইতিবাচক মোড় না এলে আগামী দশ বছরেই জলের তলায় চলে যাবে কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাই, গোয়া সহ দেশের উপকূলবর্তী নানা এলাকা। আইপিসিসির (ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই বিপদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আগামী দু’দশকের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা তারও বেশি বেড়ে যাবে। এর ফলে এতদিনকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য এলোমেলো হয়ে যাবে। যার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, ধস, বজ্রপাত থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানবসভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে দ্রুত ঠেলে নিয়ে যাবে। পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার ফলে হিমবাহ, বরফের স্তর ইতিমধ্যে গলতে শুরু করেছে। বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী ১০ বছরেই ভয়াবহ পরিণতি প্রত্যক্ষ করবে মানুষ। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে ঝড়, বন্যা, বৃষ্টিপাত। জলমগ্ন হবে প্রাণচঞ্চল শহর ও জনপদের বেশিরভাগ অংশ। 


স্যাটেলাইট এবং বিভিন্ন জায়গায় বসানো নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ওই রিপোর্টে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। কলকাতার বরানগর থেকে রাজপুর-সোনারপুর, হাওড়ার সাঁতরাগাছি, বালিটিকুরি থেকে গঙ্গা পর্যন্ত অংশ ডুবে যাবে। এর আগে ‘কাউন্সিল অব এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়েদার’ (সিইইডব্লু) জানিয়েছে, ভারতের প্রতি চার জেলার মধ্যে তিনটিই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ। বন্যা এবং খরা দু’টোই বেড়ে চলেছে। আগামী কয়েকবছরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে তিনগুণ। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যা। সিভিআই বা ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি ইনডেক্স থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের জেলাগুলির ৮০ শতাংশ নাগরিকই ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিপদসীমার আওতায় রয়েছে। ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ২৭টিই রয়েছে বিপজ্জনক জায়গায়। পশ্চিম ও মধ্য ভারত খরা, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারত বন্যা, দক্ষিণ এবং পূর্ব ভারত সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও খরার জন্য বিপজ্জনক সীমারেখার মধ্যেই রয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।  


এই পরিস্থিতিতে আগামী দশ বছরের জন্য পরিস্থিতি সামাল দিতে এক ট্রিলিয়ন (এক লক্ষ কোটি) ডলার আর্থিক সাহায্য চাইল ভারত। গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জলবায়ু সঙ্কটের মোকাবিলার জন্য যে পাঁচ দফা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, তা কার্যকর করতে এই আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে ‘উন্নত’ দেশগুলির কাছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের সচিব রামেশ্বরপ্রসাদ গুপ্তা গ্লাসগোয় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যে এনডিসি (ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন) গ্রহণ করেছি, তা কার্যকর করতে এক ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ প্রয়োজন। এতে ২০৩০ সালের মধ্যে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ উৎপাদন করা সম্ভব হবে পুনর্নবীকরণযোগ্য উৎস থেকে। ২০৩০-এর মধ্যে কার্বন নির্গমনও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে অনেকটাই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #Mumbai, #Chennai, #IPCC, #Under water

আরো দেখুন