বিহারে আবার জঙ্গলরাজ, ভুয়ো ক্লিনিক নিয়ে পোস্ট করে খুন সাংবাদিক
এক সাংবাদিক তথা সমাজকর্মীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিহারের মধুবনীতে। মৃতের নাম বুদ্ধিনাথ ঝা ওরফে অবিনাশ ঝা (২২)। শুক্রবার তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে পাশের গ্রাম বেতুনের কাছে জাতীয় সড়কের উপর।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বুদ্ধিনাথ। তাঁকে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল ওই দিন রাত ১০টায় স্থানীয় একটি বাজারে। পেশায় সাংবাদিক বুদ্ধিনাথ ছিলেন এক জন সমাজকর্মীও। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে কাজ করতেন তিনি। সম্প্রতি ফেসবুকে মেডিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল ওই ক্লিনিকগুলি ভুয়ো। সেই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পরই এমন বেশ কয়েকটি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। বেশ কয়েকটি বন্ধও করে দেওয়া হয়। এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের জরিমানাও করা হয়।
সেই ফেসবুক পোস্টের পর থেকেই বুদ্ধিনাথের কাছে লাখ লাখ টাকার প্রস্তাব আসে। শুধু তাই নয়, হুমকি ফোনও আসতে শুরু করে বলে অভিযোগ। কিন্তু নিজের কাজে অটল ছিলেন বুদ্ধিনাথ। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি বেনিয়াপট্টির কাছে থাকা একটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ বাড়ির সরু গলিতে হাঁটতে হাঁটতে ফোন করছিলেন বুদ্ধিনাথ। তার পর মূল রাস্তায় যান। বাড়ির রাস্তাতেই কিছুটা দূরে তাঁর কাজ করার একটি ঘর ছিল। সেখানেও যেতে দেখা গিয়েছে সাংবাদিককে।
রাত ৯টা ৫৮ মিনিটে তাঁকে ফের বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়। গলায় হলুদ রঙের একটা স্কার্ফ জড়ানো ছিল। লোহিয়া চক এবং বেনিয়াপট্টি থানা পেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, রাত ১০টা ১০ মিনিটে বুদ্ধিনাথকে স্থানীয় এক বাজারে দেখেন তিনি। শেষ বারের মতো ওই বাজারেই দেখা গিয়েছিল বুদ্ধিনাথকে। তার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
বুধবার সকালে বুদ্ধিনাথকে খুঁজে না পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে তাঁর মোটরসাইকেল ছিল। ক্লিনিকের দরজা খোলা ছিল। এমনকি যে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতেন সেটাও তখন চলছিল। ফলে পরিবারের সদস্যরা ভেবে বসেন, হয়তো কাছেপিঠেই কোথাও কাজে গিয়েছেন বুদ্ধিনাথ। কিন্তু দিন পেরিয়ে গেলেও বুদ্ধিনাথের পাত্তা নেই দেখে পরিবারের সদস্যরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।