৪ বছরে দুই সাগরের ৭৪% ঘূর্ণিঝড়ই তীব্র
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর মিলিয়ে এক বছরে আটটি ঘূর্ণিঝড় দেখেছিল ২০১৯। তার মধ্যে ছ’টিই ছিল তীব্র বা তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী। একটি সুপার সাইক্লোন। ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় খাতাই খুলল সুপার সাইক্লোন দিয়ে। গত চার বছরের হিসেব ধরলে সংখ্যাটা এই রকম: ১৯টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ১৪টি তীব্র। যার অর্থ, ৭৪%।
আইপিসিসি-র সর্বশেষ রিপোর্টও বলেছে, উষ্ণায়নের প্রভাবে বিশ্ব জুড়ে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা, দুই-ই বাড়বে। ওডিশা বা অন্ধ্রপ্রদেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আনাগোনা কম। যেমন ২০০২ সালের পর ঘূর্ণিঝড় আয়লা এসেছিল ২০০৯ সালে, আবার তার পরের ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এসেছে দশ বছরের বিরতি দিয়ে। সেই রাজ্যেই মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানে দু’টি ঝড় হাজির। দু’টিই তীব্র।
সম্ভাব্য কারণ কী কী?
সমুদ্রতলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি একটা বড় কারণ। গত এক দশকে ঘূর্ণিঝড়ের দ্রুত শক্তিবৃদ্ধিতে সাহায্য করছে গরম সমুদ্র। আম্পানের সৃষ্টির আগে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে জলতলের তাপমাত্রা ৩২-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন হয় ২৬.৫ ডিগ্রি বা তার বেশি তাপমাত্রা।
তবে শুধু গরম সমুদ্রই আম্পানকে রাতারাতি বাহুবলী করে তুলেছে, এমন নয়। শক্তিশালী হওয়ার জন্য আরও বহু শর্ত লাগে। এক্ষেত্রে তার বেশির ভাগই অনুকূল ছিল। যেমন, বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের ঘেরাটোপে থাকায় সোমবার পর্যন্ত গতি শ্লথ ছিল। তখন দফায় দফায় শক্তি বেড়েছে। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে বাতাসের গতিবেগের ফারাক কম ছিল। ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশনের মতো শর্তের অবস্থান এবং সক্রিয়তাও অনুকূল ছিল। স্থলভাগ থেকে বেশ কিছুটা দূরে থেকে এগোনোয় গরম, শুকনো হাওয়ার প্রভাবে দুর্বল হবে, সেটাও হয়নি।