দেশ বিভাগে ফিরে যান

সংসদে নেহরুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান কার্যত বয়কট বিজেপির, নিন্দা বিরোধীদের

November 15, 2021 | 2 min read

‘পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা।’ ব্যস, সাতসকালে এই একটিমাত্র টুইটেই কর্তব্য শেষ। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর ১৩২তম জন্মদিনে এভাবেই দায় সেরেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাননি শান্তিবন। প্রায় ঢিলছোঁড়া দূরত্বে ৭, লোক কল্যাণ মার্গের বাংলোয় উপস্থিত থাকলেও আসেননি সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে। আয়োজন কিন্তু সেখানে যথারীতি ছিল। শুধু মোদীতেই শেষ নয়। লোকসভার স্পিকার অফিস আয়োজিত রবিবারের এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না অধ্যক্ষ ওম বিড়লাও। অথচ এই ধরনের প্রায় প্রত্যেক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন তিনি। ছিলেন না রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুও। বলা ভালো, মোদী মন্ত্রিসভার কোনও হেভিওয়েট সদস্যকেই এদিন সেন্ট্রাল হলে দেখা যায়নি। এমনকী শিশু দিবসে গরহাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রীও। একা কুম্ভ বলতে কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, মধ্যম উদ্যোগের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভানুপ্রতাপ সিং ভার্মা।

বিরোধী পক্ষের উপস্থিত সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে বা আনন্দ শর্মা সহ কংগ্রেস এমপিদের কাছে বিষয়টি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু বলে মনে হয়েছে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। উঠেছে তীব্র সমালোচনার ঝড়। সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও। কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক জয়রাম রমেশ সরকারকে খোঁচা দিয়ে টুইট করেছেন, ‘অসাধারণ এক দৃশ্য দেখা গেল সংসদের সেন্ট্রাল হলে। লোকসভার স্পিকার, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তো বটেই, একজনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। এর থেকে নির্মম আর কী হতে পারে?’

তাল দিয়েছেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়ানও। নেহরুর জন্মদিনের এই ঘটনাকে সামনে রেখে মোদী সরকারের উদ্দেশে তাঁর তোপ, ‘এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এ ধরনের আচরণই তো সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছে।’ উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালের ৫ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণ ‘ভারতরত্ন’ নেহরুর প্রতিকৃতি সংসদের সেন্ট্রাল হলে উন্মোচিত করেছিলেন। সরকার পক্ষের এই আচরণে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মোদী সরকার যেখানে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালনে সর্বত্র প্রচার বাড়াচ্ছে, সেখানে স্বাধীনতার পর নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখা জওহরলাল নেহরুকে বয়কট করার যুক্তি কি? এর আগেও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্ট্রোরিক্যাল রিসার্চ ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালনের ছবি থেকে নেহরুকে বাদ দিয়ে বিতর্কে বাড়িয়েছিল।

তবে বয়কটের অভিযোগ তথা বিতর্ক উড়িয়ে দিচ্ছে সরকার তথা লোকসভার সচিবালয়। শিশু দিবস উপলক্ষে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা রাজস্থান বিধানসভায় এক অনুষ্ঠানে ছিলেন। উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুও অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে স্বর্ণ ভারত ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তাই সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। দুই সভার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সেক্রেটারি জেনারেল যথাক্রমে উৎপল কুমার সিং এবং পি সি মোদী। রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে, এইসব অনুষ্ঠানের সময়সূচি কি একটু অদল বদল করা যেত না? তাহলে যেমন সৌজন্য বজায় থাকত, তেমনই বেঁচে থাকত রাজনৈতিক সহবতও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Parliament, #bjp, #Nehru's birth anniversary

আরো দেখুন