বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে বাংলার প্রাপ্য ১১৬৩ কোটি টাকা!
বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য ১১৬৩ কোটি টাকা। মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এ’কথা জানান সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তিনি বলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে বারবার আবেদন করেও কিছু মেলেনি। ২০১৫ সালে জলমন্ত্রক প্রায় ১২১৫ কোটি টাকা অনুমোদন করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে কয়েক বছর ধরে টালবাহানা করছে। কখনও বলছে, ৭৫ শতাংশ দেবে, আবার কখনও বলছে ৬০ শতাংশ, কখনও-বা ৫০ শতাংশ। দু’মাস আগে আমাদের এক প্রতিনিধিদল দিল্লিতে দেখা করে। কিন্তু এখনও কোনও টাকা মেলেনি।
বিধায়কদের প্রশ্নের জবাবে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, সুন্দরবনের আইলা ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনর্নির্মাণের জন্য ১৩৩৯.৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়। যার মধ্যে ৬৬২ কোটি দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য খরচ করেছে ৩৩৫ কোটি। আগে এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অনুদান দেওয়ার কথা ছিল মোট ৭৫ শতাংশ। ২০১৫-১৬ সালে তা কমিয়ে আনা হয় ৫০ শতাংশে। সেই বরাদ্দকৃত অর্থও দিচ্ছে না কেন্দ্র। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাঘাই প্রকল্পে অনুমোদিত হয় ২৩৫.২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে কেন্দ্র দিয়েছে ১৬৬.৫৮ কোটি টাকা। আর রাজ্য দিয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা।
অপূর্ব সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে সেচমন্ত্রী বলেন, কান্দি মাস্টার প্ল্যান মুর্শিদাবাদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। তাতে অনুমোদিত হয় প্রায় ৪০৯ কোটি টাকা। কেন্দ্র দিয়েছে প্রায় ৮২ কোটি টাকা। সেখানে রাজ্য খরচ করেছে ২৩৪ কোটি টাকা। বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের কাছে বহুবার আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। এই প্রকল্পের অধীনে কান্দি মহকুমায় ৩০.৯০ কিমি খাল সংস্কার হয়েছে। তিনটি সেতু তৈরি হয়েছে। ৫৯টি স্লুইস গেট সংস্কার হয়েছে। তিনটি রেল ব্রিজের সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একটি রেল ব্রিজের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে। দুটি রেল ব্রিজের সার্ভের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এর জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে ১০৩ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৯টি রোড ব্রিজের সম্প্রসারণ করা হবে।
বিজেপির বিশ্বনাথ কারকের প্রশ্নের জবাবে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ফলে ৬৫৭ বর্গ কিমি এলাকা উপকৃত হবে। যেখানে উপকৃত জনসংখ্যা হল ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার। কিন্তু কেন্দ্রীয় অনুদান না-পাওয়ায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অনুদান না-পেলেও বন্যাক্লিষ্ট মানুষের দুর্দশা দূর করতে পলাশপাই নদীর ১৯ কিমি, চন্দ্রেশ্বর নদীর ১৪ কিমি, দুর্বাচটি খালের ২৭ কিমি খনন কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ১৯১
কোটি টাকা। ১৪৮ কোটি টাকায় নিউ কোশী নদী এবং খিরাই-বাকসি খালের খনন চলছে। কেন্দ্রীয় অনুদান পেতে বিজেপি বিধায়কদের সহায়তা দাবি করেন সেচমন্ত্রী।