পাঁচতারা হোটেলে ঘুমিয়ে দিল্লি দূষণের জন্য কৃষকদের দায়ী করা উচিত না, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের
যাঁরা পাঁচতারা হোটেলে ঘুমোয়, তাঁরা দিল্লির দূষণের (Pollution) জন্য কৃষকদের দায়ী করে চলেছেন। দূষণ মামলায় এমনই কড়া মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত পরিষ্কার করে দিয়েছে দিল্লি (Delhi) ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যে দূষণের বিষয়ে কৃষকদের শাস্তি দিতে চায় না তারা। বরং তাঁদের বিকল্পের ব্যবস্থা করে দিয়ে সমস্যার সমাধানেই আগ্রহী শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার কথায়, ”আমরা কৃষকদের শাস্তি দিতে চাই না। আমরা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে বলেছি কৃষকদের অনুরোধ করতে, যাতে অন্তত এক সপ্তাহের জন্য শস্যের নষ্ট অংশ পোড়ানো বন্ধ রাখা হয়।”
উল্লেখ্য, দিল্লি ও আশপাশের রাজ্যগুলিতে দূষণের মাত্রা লাগামছাড়া অবস্থায় পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই রাজধানীতে সমস্ত স্কুলকলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আরও নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে। অনেকেরই মতে, শস্যের নষ্ট অংশগুলি পোড়ানোর (Stubble burning) জেরেই দূষণের মাত্রা এই পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মতে, ”টিভিতে যাঁরা বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন তাঁরাই অন্য সব সূত্রের থেকে বেশি দূষণ ছড়াচ্ছেন। সকলেরই নিজস্ব অ্যাজেন্ডা রয়েছে। অথচ আমরা সমাধানটা বের করতে চাইছি।”
কৃষকদের শস্যের নষ্ট অংশ পোড়ানোর প্রসঙ্গে এর আগে বিচারপতি সূর্য কান্ত জানিয়েছিলেন, কৃষকদের এর বিকল্প পদ্ধতির সুযোগ করে দিতে হবে। এদিনও সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে তাঁর কথায়, ”আমাদের ভাবতে হবে কেন কৃষকরা বাধ্য হচ্ছেন এই ভাবে শস্যের নষ্ট অংশ পোড়াতে। সেটা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে শুয়ে থাকা লোকেরা কৃষকদের দায়ী করছেন। একবার এই সব ছোটখাটো জমি মালিকদের দিকে দেখুন। এঁদের পক্ষে কি যন্ত্রের খরচ সামলানো সম্ভব?”
কেন্দ্র ও দিল্লি প্রশাসনের মধ্যে শস্যের বাতিল অংশ পোড়ানো নিয়ে চলতে থাকা চাপান উতোরের পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট এভাবে ভর্ৎসনা করল সমালোচকদের। আদালতের মতে, এভাবে পারস্পরিক অভিযোগ তোলার পালা চলতে থাকলে আসল বিষয়টিই লঘু হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, সোমবারই তিনটি ধাপে দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, ভারী ট্রাকের দিল্লিতে প্রবেশ বন্ধ করা এবং কঠোরভাবে লকডাউন পালন করেই দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। অন্যদিকে, পাঞ্জাব-হরিয়ানা সরকারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ফসল পোড়ানোর বিষয়টি কিছুদিন স্থগিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।