আরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ করার পথে মোদী সরকার
আরও ছোট করে আনা হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পরিধি। বিগত বছরগুলিতে একের পর এক ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের সুফল পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই শীঘ্রই আরও ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের আভাস দেওয়া হচ্ছে অর্থমন্ত্রকের পক্ষ থেকে। বুধবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে ব্যাঙ্কিং কর্তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকসহ প্রায় গোটা মন্ত্রিসভার প্রতিনিধিদের বৈঠক। আগামীতে আরও বেশি করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার মাথাভারী কাঠামো ছেঁটে ফেলা হবে বলেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ হাতে গোনা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রেখে বাকিগুলিকে হয় সংযুক্ত করা হবে, অথবা বিক্রি করে দেওয়া হবে। ভারত সরকারের ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক, বৃহৎ শিল্পমহল, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্তারা এই বৈঠকে অংশ নিয়েছে।
বুধবার দিনভর এই বৈঠকের পর আজ দ্বিতীয় দিনের বৈঠকের শেষে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ব্যাঙ্কিং নিয়ে একঝাঁক নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে জানা যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ব্যাঙ্কের ভূমিকা সংক্রান্ত এই বৈঠকের ঘোষিত অ্যাজেন্ডা হল ঋণদান পদ্ধতিকে আরও জোরদার করা। অর্থাৎ আরও বেশি করে বৃহৎ ও ক্ষুদ্র সংস্থার কাছে ঋণের প্রকল্প নিয়ে যাক ব্যাঙ্কগুলি, এরকমই চাইছে অর্থমন্ত্রক। একইভাবে মাথাভারী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংস্কার কর্মসূচিকেও আরও বাড়ানো হচ্ছে। অর্থাৎ একসঙ্গে অনেক ব্যাঙ্কের দায়িত্ব আর সরকারের হাতে থাকবে না। ইতিমধ্যেই একঝাঁক ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ হয়েছে। আরও সংযুক্তিকরণ চলবে।
তবে শুধু সংযুক্তিকরণ নয়। বুধবারের বৈঠকে ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বুধবার ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সচিব তুহিন কান্তি পান্ডে বলেছেন, আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই অন্তত ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, এই তালিকায় দুটি ব্যাঙ্কও আছে। ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ভারত সরকারের প্রায় প্রতিটি মন্ত্রকের প্রতিনিধিদেরই ডাকা হয়েছিল। বিশেষ করে কৃষি, শিল্প বাণিজ্য, সড়ক পরিকাঠামো, জাহাজ ইত্যাদি বিভাগের প্রতিনিধিদের পৃথক প্রেজেন্টেশন হয়েছে। হঠাৎ একসঙ্গে গোটা দেশের তাবৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে এই বৈঠকের উদ্দেশ্য কী, তা নিয়ে প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঘোষণা প্রবল আগ্রহের সঞ্চার করেছে। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের সুফলের প্রমাণ হিসেবে সিআইআই আয়োজিত অন্য এক সভায় নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ ২.৯ শতাংশ কমে গিয়েছে। শুধুমাত্র উৎসব মরশুমেই ব্যাঙ্কগুলির ঋণদান কর্মসূচি ৭৫ হাজার কোটি টাকা স্পর্শ করেছে।