বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

অফিস ও রিটেল স্পেসের চাহিদা শূন্যের নীচে নামার আশঙ্কা

May 23, 2020 | 2 min read

কলকাতা সহ দেশের সমস্ত শহরে অফিস এবং খুচরো বিপণীর জন্য জায়গার চাহিদা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। টানা লকডাউনের জেরে কলকাতাতে চাহিদা আগামী এক থেকে দু’বছর শূন্যের নীচে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা। 

এমনিতেই টানা দেড় মাসের করোনা-লকডাউনে সারা দেশের সমস্ত অর্থনৈতিক কাজকর্ম একেবারে স্তব্ধ। আর লকডাউন ওঠার পরেও যেহেতু অর্থনীতি অত্যন্ত শম্বুক গতিতে এগোতে শুরু করবে, তাই যে সমস্ত সংস্থা নয়া অফিস খোলার পরিকল্পনা করেছিল, তাদের অধিকাংশই তা স্থগিত রাখবে।

একই কথা প্রযোজ্য দেশের খুচরো বিক্রীর ক্ষেত্রেও দীর্ঘ করোনা-লকডাউন ক্রেতা চাহিদা শূন্য করেছে। তার উপর লকডাউনের প্রভাবে চাকরি ছাঁটাই, বেতন হ্রাস অদূর ভবিষ্যতে স্বাভাবিক নিয়ম হতে চলেছে। ফলে, চাহিদা লকডাউন-পূর্ববর্তী সময়ের থেকেও কমে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনার মধ্যে কোনও ব্যবসায়ীই নয়া বিপণী খোলার পথে হাঁটবেন না।

রিয়েল এস্টেট উপদেষ্টা সংস্থা কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন এবং রাজস্ব ক্ষতির কারণে বেঙ্গালুরুর অধিকাংশ খুচরো বিপণীর মালিক তাঁদের ব্যবসার পুনরুজ্জীবন না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির মালিকদের কাছে ভাড়ায় সম্পূর্ণ ছাড়ের দাবি জানিয়েছে। হায়দরাবাদে আগামী এক বছর অফিসের চাহিদায় বিরাট ভাঁটা আসবে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

ব্যতিক্রম নয় কলকাতাও। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে ভাড়ায় নেওয়া একাধিক অফিস লকডাউন সময়কালে বাড়ি ভাড়া সম্পূর্ণ মকুব করার জন্য বাড়ির মালিকের দ্বারস্থ হয়েছে। সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়া-র কলকাতা শাখার হেড স্বপন দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, লকডাউন পিরিয়ডে ৫০শতাংশ বাড়ির মালিক অফিস ভাড়াটিয়াদের ভাড়া সম্পূর্ণ মকুব করবে। আর বাকি ৫০শতাংশ মালিক সম্পূর্ণ ভাড়া মকুব না করলেও কিছুটা ছাড় দেবে। খুচরো বিপণীগুলির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে। কারণ, লকডাউনের জন্য কারও অফিস, দোকানই না খোলায় ব্যবসা তো শূন্য।’

করোনা-লকডাউনে প্রায় সমস্ত পরিষেবা সংস্থা কর্মীদের ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম করাচ্ছে। আর তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম এখন প্রায় ৮৫শতাংশ। লকডাউনের পরেও ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। 

কর্মী সংখ্যার নিরিখে ভারতের বৃহত্তম তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে তারা তাদের প্রায় ৫ লক্ষ কর্মীর ৭৫ শতাংশকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম অথবা রিমোট লোকেশন থেকে কাজ করাবে। টাটা গোষ্ঠীর এই সংস্থাটি বছরে রিয়েল এস্টেট খাতে প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা খরচ করে। তাদের ৭৫ শতাংশ কর্মীকেই যদি অফিসে না যেতে হয়, সে ক্ষেত্রে তারা রিয়েল এস্টেট খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাঁচাতে সক্ষম হবে।

করোনা-লকডাউনের ধাক্কা সুদূরপ্রসারী হবে বলে একমত সমস্ত অর্থনীতিবিদ। লকডাউন ইতিমধ্যেই একাধিকবার সম্প্রসারিত হওয়ায় চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি ২০শতাংশ কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে ইক্রা। রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞদের মতে, এর সরাসরি প্রভাব পড়বে অফিস ও রিটেল স্পেস ভাড়ার ক্ষেত্রে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#retail space, #demand, #Coronavirus, #Lockdown, #jobs, #office space

আরো দেখুন