কৃষি আইন নিয়ে মোদী পিছু হঠতেই সমাজ মাধ্যমে ‘জয় ঘোষণা’ বিরোধী শিবিরের
শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে সেই সুখবর শোনালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁর এই ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ার বন্যা নেটদুনিয়ায়।

সামনে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব-সহ ৫ রাজ্যে ভোট। কৃষক আন্দোলনে সবচেয়ে উত্তপ্ত পাঞ্জাবই। কেন্দ্রের তিন বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আন্দোলনে উত্তপ্ত রাজধানী দিল্লি। আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়েছে সর্বত্র। চাপ বাড়ছিলই কেন্দ্রের উপর। এবার সেই চাপে পড়েই তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্র। শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে সেই সুখবর শোনালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁর এই ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ার বন্যা নেটদুনিয়ায়।
টুইটারে কৃষি আইন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে রাহুল লিখেছেন, ‘দেশের অন্নদাতাদের সত্যাগ্রহ অহঙ্কারের মাথা নত করে দিয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জয়কে অভিনন্দন। জয় হিন্দ। জয় হিন্দের (ভারতের) কৃষক।’
কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম এ বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছেন, ‘‘ভোটে হারার ভয়েই এমন পদক্ষেপ করল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।’’
কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘আমি আমাদের কৃষকদের হাল না ছাড়ার দৃঢ়তাকে সম্মান জানাই।’
কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল এ প্রসঙ্গে লেখেন, ‘তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। ইউপি নির্বাচনের কারণেই এই বোধদয়। অনেকগুলি প্রাণ বাঁচানো যেত!’
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে লেখেন, ‘এই জয় কৃষকদের সাথে সাথে ভারতের জনতার জয়। যারা আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন এই জয় তাদের নামে’।
কংগ্রেসের মুখপাত্র এবং সাংসদ অভিষেক সিংভি নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়ে লেখেন, ‘বিজেপি নির্বাচনের কথা ভেবেই সব কিছু করে। এটাও পাঞ্জাব ভোটকে মাথায় রেখেই। মন থেকে করলে এমসিপি- র জন্যে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে পারত।’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল লেখেন, ‘৭০০ কৃষক শহিদ হয়েছেন। আগামী প্রজন্ম তাঁদের স্মরণ করবে। কিভাবে তাঁরা দেশের কৃষি ব্যবস্থা এবং কৃষকদের বাঁচানোর জন্যে নিজেদের প্রাণ দিয়েছেন।’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া লেখেন, ‘আইনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা সমস্ত কৃষকদের আমার সালাম’।
সিপিআইএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি লেখেন, ‘কৃষকদের লড়াইকে আমি সম্মান জানাই। ৭৫০ টি প্রাণ চলে গেছে তা ভুললে চলবে না। তাঁরা আমাদের শহিদ।’
কাশ্মীরের প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘কেউ যদি মনে করে থাকেন এই সরকার মন থেকে এই আইন প্রত্যাহার করেছে তাহলে তারা ভুল করবেন। এরা শুধু ভোট সংখ্যা বোঝে।’
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের অফিসিয়াল হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘আইন তৈরি হয় আলোচনা ও পরিপক্কতার মাধ্যমে, অহংকারের বশবর্তি হয়ে নয়।’
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীণ পট্টনায়ক লেখেন, ‘কৃষকদের জন্যে তাঁদের পরিবার বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছে। এখন তাঁদের স্বাগত জানানোর পালা।’
বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী লেখেন, ‘আমি আনন্দিত যে কৃষকরা প্রায় এক বছর ধরে ভয়ঙ্কর গরম এবং বরফ ঠান্ডায় শান্তিপূর্ণ সত্যাগ্রহে বসেছিলেন, আজ তার ইতি হল।’