‘কৃষকের মার কেওড়াতলা পার!’ কৃষি আইন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে মোদীকে খোঁচা দেবাংশুর
‘কৃষকের মার কেওড়াতলা পার!’, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। টেনে আনলেন সিঙ্গুর প্রসঙ্গ। দেবাংশু বলেন, ‘বামেদের ২৩৫ -এর দম্ভ হোক বা নরেন্দ্র মোদীর ৩০৩ – এর অহংকার, কৃষকের সামনে কোনও কিছুই টিকতে পারে না। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিজীবী। সেটা মাথায় রাখতে হবে তো!’ শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী কৃষি বিল প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন। সফল হয়েছে কৃষকদের বছরব্যাপী আন্দোলন। এই সিদ্ধান্তের পিছনে কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করছে বলে দাবি করেন দেবাংশু। তাঁর কথায়, ‘প্রথমত, কৃষকদের চটিয়ে কখনও ক্ষমতায় থাকা যায় না। দ্বিতীয়ত, সামনেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। দেশের বেশিরভাগ কৃষকই পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। ফলত ভোটের আগে আচমকাই এই সিদ্ধান্ত কাকতালীয় নয় কি?’
এদিন নরেন্দ্র মোদীকে খোঁচা দিয়ে যুব নেতা বলেন, ‘আজ যে ভুলের কথা নরেন্দ্র মোদী স্বীকার করলেন, সেই ভুলটাই যদি এক বছর আগে ভেঙে যেত, তাহলে হাজার হাজার কৃষককে মারা যেতে হত না। কেউ আন্দোলন করে মারা গিয়েছেন। কেউ আবার মন্ত্রীপুত্রের গাড়ির টায়ারের তলায় চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। এক বছর ধরে প্রবল শীতে দিল্লির রাজপথে বসেছিলেন বৃদ্ধ কৃষকরাও। তাঁদের এতটা কষ্ট পেতে হত না।’
তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘কথায় আছে বেটার লেট দ্যান নেভার। এতজনের মৃত্যুর পরে নরেন্দ্র মোদীর ভুল ভেঙেছে। এক বছর পরে হলেও তিনি যে ভুল স্বীকার করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু,বিজেপি যেন এটা না ভাবে যে এতে তারা ভোট পাবে। মানুষ বোকা নয়। ১০০ -এর উপরে পেট্রলের দাম তুলে দিয়ে পাঁচ টাকা কমালে আর মানুষের আস্থা অর্জন করা যাবে না।’
এদিন সকালে ফেসবুক লাইভ -এও উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন তৃণমূলের যুব নেতা। ভিডিয়োতে এসে তিনি বলেন, ‘এতদিন কৃষকদের জঙ্গি, খলিস্তানি তকমা দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। আজ তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, দেশের প্রধানমন্ত্রী কবে থেকে জঙ্গি, খলিস্তানিদের কথা শোনেন? যে বিজেপি নেতারা এতদিন কৃষি বিলকে ন্যায্য বলেছেন, তাঁদের নেতাই আজ বলছেন সিদ্ধান্ত ভুল! আগেও ভক্তরা বলেছিলেন মাস্টারস্ট্রোক, এখনও একই কথা বলবে!’
দেবাংশুর আক্রমণ, ‘হ্যাঁ, মোদীজি নোটবন্দিটাও ভুল ছিল। সে বারও যদি নাগরিক আন্দোলনকে মান্যতা দিতেন, তাহলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙে যেত না।’
তাঁর সংযোজন, কৃষকদের সংঘবদ্ধ আন্দোলনের কাছে নরেন্দ্র মোদীকে পিছু হঠতে পারল। আজকের দিনটি কৃষকদের উৎসর্গ করা হোক। আমরা যাঁদের চাষ করা ভাত খাই, তাঁরা আজ জিতেছে। কৃষক সমাজকে আমার স্যালুট। এই প্রথম আন্দোলনকারীরা নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে হঠাতে পারলেন।’